মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, (হে আমার হাবীব!) আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত অর্থাৎ আমাকে পাওয়ার কারণে তোমাদের উচিত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা। অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ আনেন রবীউল আউয়াল শরীফ মাসের ১২ই শরীফ।
আর একারণেই পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ হচ্ছে- সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম আর ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবীই হচ্ছে- কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর। যা পালন করা মুসলমান তো অবশ্যই জিন-ইনসানসহ সমস্ত কায়িনাতের জন্য ফরয এবং নাজাতেরও কারণ।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি “আসন্ন সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর অর্থাৎ কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪৩২ হিজরীর” গুরুত্ব ও নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল শান-মান, মর্যাদা-মর্তবা ও ফাযায়িল-ফযীলত আলোচনাকালে বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা ইউনুস-এর ৫১ নং আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “(হে আমার হাবীব!) আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক উনার ফযল ও রহমত অর্থাৎ আমাকে পাওয়ার কারণে তোমাদের উচিত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা। অর্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা।” এ আয়াত শরীফ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যমীনে তাশরীফ আনার পবিত্র দিনটিও ঈদের দিন বা খুশির দিন হিসেবে সাব্যস্ত হলো।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ ও প্রসিদ্ধ কিতাব- মুয়াত্তা মালিক, ইবনে মাজাহ, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক উনার প্রথম নবী ও রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি, উনার যমীনে আগমন ও উনার বিছাল শরীফ জুমুয়ার দিন সম্পন্ন হয়েছে। যার কারণে এ জুমুয়ার দিনটিকে স্বয়ং আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে ঈদের দিন ঘোষণা করেন এবং এ দিনকে ঈদের দিন হিসেবে পালন করার জন্য নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয়, এ দিনটিকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বাধিক সম্মানিত দিন হিসেবে ঘোষণা দেন। এমনকি এ দিনটিকে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা এ দুই ঈদের দিন অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত বলে ঘোষণা করেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এর ছহীহ ও প্রসিদ্ধ কিতাব বুখারী, মুসলিম, মিশকাত শরীফ ইত্যাদি কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যে দিনটিতে উনার ক্বওমসহ ফিরআউনের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন এবং লোহিত সাগর পার হয়েছিলেন সে দিনটিকে তিনি শুকরিয়াস্বরূপ রোযা রেখে পালন করেছেন এবং উনার ক্বওমকেও পালন করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেদিনকে ইয়াওমুন আযীম বা মহান দিন হিসেবে ঘোষণাও দিয়েছেন। শুধু এতটুকুই নয়, স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও সেদিনকে ইয়াওমুন আযীম বা মহান দিন ও খুশির দিন হিসেবে কবুল করে শুকরিয়াস্বরূপ সেদিন রোযা রেখে পালন করেন ও স্বীয় উম্মতদেরকেও রোযা রেখে পালন করতে বলেন।
কথা হলো, হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ক্বওমসহ লোহিত সাগর পার হওয়ার অর্থাৎ উনার ক্বওমের কিছু সংখ্যক লোক দুনিয়াবী ফিৎনা থেকে বেঁচে যাওয়ার দিনটি যদি মহান দিন এবং শুকরিয়া ও খুশি প্রকাশের দিন হিসেবে ক্ববূল বা গৃহীত হয় তাহলে যিনি কুল-কায়িনাতকে দুনিয়াবী ও উখরবী ফিৎনা-ফাসাদ থেকে বাঁচানোর জন্য দুনিয়াতে তাশরীফ আনেন এবং যাঁর ওসীলায় কুল-কায়িনাত সৃষ্টি হলো এবং যিনি কুল-মাখলূক্বাতের জন্য রহমত ও নিয়ামত হিসেবে যমীনে তাশরীফ নিলেন, যিনি আগমন না করলে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিসহ কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা সৃষ্টিই হতেন না উনার সেই বিলাদত শরীফ ও বিছাল শরীফ-এর দিন কতো মহান, কতো বেশি শুকরিয়া প্রকাশের ও কতো বেশি খুশি বা ঈদ পালনের তা ফিকির করতে হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, এখন কথা হলো হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি, যমীনে আগমন ও বিদায়ের কারণে জুমুয়ার দিন যদি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত হয় তাহলে যিনি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সৃষ্টি করা না হলে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকেসহ কোন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সৃষ্টি করা হতো না এবং উনাদের বিশেষ কোন ঘটনাও সংঘটিত হতো না, শুধু তাই নয়, আসমান-যমীন, লওহো-কলম, আরশ-কুরসী, জিন-ইনসান, ফেরেশতা, বেহেশত-দোযখ, এককথায় কায়িনাতের কোনো কিছুই সৃষ্টি করা হতো না উনার যমীনে আগমন তথা বিলাদত শরীফ ও বিছাল শরীফ-এর দিন ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ কতো মহান, কতো বড় খুশি বা ঈদের দিন হবে তা ফিকির করতে হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি উনার উম্মতের আরজু বা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ পাক উনার কাছে দোয়া করেছিলেন- “আয় আমাদের রব আল্লাহ পাক! আমাদের জন্য আপনি আসমান হতে (বেহেশ্তী খাদ্যের) খাদ্যসহ একটি খাঞ্চা নাযিল করুন। খাঞ্চা নাযিলের উপলক্ষটি আমাদের জন্য, আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ (খুশি) স্বরূপ হবে এবং আপনার পক্ষ হতে একটি নিদর্শন হবে। আমাদেরকে রিযিক দান করুন। নিশ্চয় আপনিই উত্তম রিযিকদাতা। আল্লাহ পাক তিনি বললেন, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের প্রতি খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিল করবো। অতঃপর যে ব্যক্তি সে খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিলের দিনকে ঈদ বা খুশির দিন হিসেবে পালন করবেনা বরং অস্বীকার করবে আমি তাকে এমন শাস্তি দিবো, যে শাস্তি সারা কায়িনাতের অপর কাউকে দিবো না।” (সূরা মায়িদা : আয়াত শরীফ ১১৪, ১১৫)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার উক্ত দোয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ পাক তিনি খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিল করেছিলেন। আর খাদ্যসহ খাঞ্চা নাযিলের দিনটিকে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার উম্মতদেরকে নিয়ে ঈদ বা খুশির দিনরূপে পালন করেছিলেন। কথা হলো- সামান্য খাদ্যসহ এক খাঞ্চা নাযিলের দিনটি যদি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এবং উনার উম্মতের জন্য খুশির দিন হয়ে যায় এবং সে দিনটিকে খুশির দিন হিসেবে পালন না করলে কঠিন শাস্তির যোগ্য হয়, তাহলে যিনি সৃষ্টির মূল, যিনি সারা আলমের জন্য রহমত, যাকে সৃষ্টি না করলে কোনো কিছুই সৃষ্টি করা হতো না উনার বিলাদত শরীফ-এর দিনটিকে কিরূপ খুশির দিন হিসেবে পালন করা উচিত এবং সেদিন উপলক্ষে যদি কেউ খুশি প্রকাশ না করে তাহলে সে কতো কঠিন শাস্তির যোগ্য হবে তা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, তাই শরীয়ত এ দিনটিকে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম ও সাইয়্যিদে ঈদে আকবার বলে ঘোষণা করেছে এবং এ ঈদ পালন বা উদযাপন করাকে ফরযে আইন ও নাজাতেরও কারণ বলে উল্লেখ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে যারা খুশি করবে, অর্র্থাৎ ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করবে, আল্লাহ পাক তাদের জন্য রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিবেন, সমস্ত ফেরেশতা তাদের জন্য মাগফিরাত কামনা করবেন এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের জন্য শাফায়াত অবধারিত করে দিবেন। অর্থাৎ সে নিশ্চিত নাযাত লাভ করবে। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ আনেন রবীউল আউয়াল শরীফ মাসের ১২ই শরীফ। আর এ কারণেই পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ হচ্ছে- সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম আর ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ হচ্ছে- কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর। যা পালন করা মুসলমান তো অবশ্যই জিন-ইনসানসহ সমস্ত কায়িনাতের জন্য ফরয এবং নাজাতেরও কারণ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন