স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ এবং স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এর মাধ্যমে পর্দা বা বোরকা ফরয করেছেন। সুতরাং পর্দা বা বোরকার বিরোধিতাকারীরা মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত নয়। তারা কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী।পর্দা বা বোরকা মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার আর খাছ করে মহিলাদের সম্মান এবং ব্যক্তিত্বেরও প্রতীক। অতএব, ৯৭% মুসলমানের দেশ এবং রাষ্ট্রীয় দ্বীন ইসলাম-এর এদেশ বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে রাষ্ট্র কখনো এবং কোনো মতেই ‘বেপর্দাকে স্বীকৃতি দিতে বা উৎসাহিত করতে পারে না’। এবং কোনো কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানও বলতে পারে না যে, ‘পর্দা বা বোরকা পরতে বাধ্য করা যাবে না’।এছাড়া বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হলো, ‘কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর বিরোধি কোনো আইন পাশ হবে না’।কাজেই কোনো কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান যদি পর্দা বা বোরকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়; তাহলে, সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- সে কর্তৃপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা অর্থাৎ তাদের প্রতি উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইসলাম একটা পরিপূর্ণ দ্বীন বা জীবন বিধান। ইসলামে যেমন লেবাছের বর্ণনা রয়েছে তেমনি লেবাছের মাধ্যমে পর্দা পালনের জন্যও সুদৃঢ় আদেশ রয়েছে। আখেরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে লেবাছ মুবারক পরিধান করেছেন সেই লেবাছই সব মুসলমান পুরুষের লেবাছ। অপরদিকে উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা যে লেবাছ মুবারক পরিধান করেছেন সেই লেবাছই মুসলমান মহিলাদের লেবাছ। আর উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা উনাদের লেবাছ মুবারক-এর উপর এমন বড় চাদর মুবারক ঝুলিয়ে দিতেন তাতে উনাদের মাথা মুবারক থেকে পা মুবারক সম্পূর্ণই আচ্ছাদিত থাকতো। উনারা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে পর্দা পালন করতেন। আর এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান রূপ হলো বোরকা। পর্দা পালন করা ফরজ। বর্তমান যুগে পর্দা রক্ষার্থে বোরকা পরিধান করাও প্রত্যেক মুসলমান মহিলাদের জন্য ফরজ। যে কোনো ফরজের বিরুদ্ধে কোনো মুসলমান কোনো কথা বললে সে মুরতাদ ও গুমরাহ বলে গন্য হবে। এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমান। কাজেই এদেশের কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোনো কর্তৃপক্ষের বোরকার বিরুদ্ধে কথা বলার কোনো অধিকার নেই। যারা বলবে তারা ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলমান থাকবেনা বরং মুরতাদ ও গুমরাহ বলে বিবেচিত হবে।
গত বুধবার রাজউক কলেজে ছাত্রীদের লম্বা বোরকা পরতে অধ্যক্ষের নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি এক বিবৃতিতে গতকাল রাজারবাগ শরীফ-এ এসব কথা বলেন।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ইদানিং হঠাৎ ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ড, জার্মানি, লন্ডন, অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম বিদ্বেষী কাফিরদের মত আমাদের দেশের কিছু কর্তৃপক্ষ যারা নামধারী মুসলমান তারা পর্দা পালনের বিরুদ্ধে কুফরীমূলক তথা মহা ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে মুরতাদে পরিণত হচ্ছে। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ পুরুষদের পর্দা প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) মু’মিনগণকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের ইজ্জত ও আবরু হিফাযত করে। এতে তাদের জন্য অনেক পবিত্রতা আছে। নিশ্চয়ই তারা যা করে মহান আল্লাহ পাক তা অবহিত রয়েছেন।” (সূরা নূর : আয়াত শরীফ ৩০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি কুরআন শরীফ-এ মহিলাদের পর্দা প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) ঈমানদার নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের ইজ্জত ও আবরু হিফাযত করে। তারা যেন তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে; তবে চলাচলের কারণে অনিচ্ছা সত্বে যা প্রকাশ পায় তা ব্যতীত এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বুকের উপর ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাতিজা, ভাগিনা, সহধর্মিনী স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত বাদী আর পুরুষদের মধ্যে যারা অবুঝ আর বালকদের মধ্যে ঐ সমস্ত বালক যাদের কাছে মেয়েদের পর্দার বিষয়টা এখনও স্পষ্ট হয় নাই তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন এমনভাবে পদচারণা না করে যাতে তাদের চুপানো সৌন্দর্য্য প্রকাশ হয়ে পড়ে। মু’মিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহ পাক উনার কাছে তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সূরা নূর : আয়াত শরীফ ৩১)
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বর্তমানে বিষয়টা অতি দুঃখজনক হলেও সত্য যে, রাজউক কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাবি, রাবি, জবি ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু মুসলমান নামধারী শিক্ষক হাইকোর্টের বিচারকের ভূমিকায় কিছু মুসলমান নামধারী, মুসলমানের মৌলিক ধর্মীয় অধিকার পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। নিরুৎসাহিত করছে। বেপর্দা হতে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। (নাঊযুবিল্লাহ!) যা প্রকৃত পক্ষে তারা দ্বীন ইসলামেরই বিরোধিতা করে যাচ্ছে। অথচ কোন মুসলমানের পক্ষে তা কস্মিনকালেও করা সম্ভব নয়। কেউ তা করলে বুঝতে হবে সে কাফির, মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে। সে ইসলাম ও মুসলমান থেকে খারিজ হয়ে মুরতাদে পরিণত হয়েছে।
মুসলমান থেকে যারা মুরতাদ হয় তাদের প্রতি শরীয়তের ফায়ছালা হচ্ছে, তাদের যিন্দিগীর সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যাবে, বিয়ে করে থাকলে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে, হজ্জ করে থাকলে তা বাতিল হয়ে যাবে, তার ওয়ারিশ সত্ত্ব বাতিল হয়ে যাবে, তাদের তওবার জন্য সময়সীমা তিনদিন, এর মধ্যে তওবা না করলে তাদের প্রতি মুরতাদের শাস্তি বর্তাবে। এরা মারা গেলে এদের গোসল, জানাযা, কাফন, দাফন কোনটিই জায়িয নেই। এবং এদেরকে কুকুর-শৃগালের মতো গর্তে পুঁতে রাখতে হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আজকে কয়েকটি প্রশ্ন খুব জোরদার হয়ে দাঁড়িয়েছে যে রাষ্ট্রযন্ত্র তথা সরকার এদেশের ৯৭ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানকে ইসলাম পালন করতে দিবে? না ইসলাম পালন করতে দিবেনা? পবিত্র কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ পালন করতে দিবে? না দিবেনা? হাদীছ শরীফ পালন করতে দিবে? না হাদীছ শরীফ পালন করতে দিবেনা? জান্নাতে যেতে দিবে? না বেপর্দা হয়ে জাহান্নামী হতে বাধ্য করবে? (নাঊযুবিল্লাহ!)
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের মনে রাখা উচিৎ ‘কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস হবেনা’ এ ওয়াদা দিয়ে তারা ক্ষমতায় এসেছে। এখন সে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা এদেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানের সাথে প্রতারণা করার শামিল। মূলত এদেশের ব্যক্তি মুসলমান নফসের কারণে ইসলাম পালনে গাফলতি করতে পারে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে ইসলামের উপর আঘাত সমষ্টিগতভাবে ৯৭ ভাগ মুসলমান কখনো বরদাশত করতে পারে না। এ সত্য সরকারকে বুঝতে হবে। বোরকার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। দেশে পর্দা পালনের ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করতে হবে। কাজেই কোনো কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান যদি পর্দা বা বোরকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়; তাহলে, সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- সে কর্তৃপক্ষ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা অর্থাৎ তাদের প্রতি উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন