সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সৃষ্টিকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদের দিন- পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি ফযল-করম এবং রহমত হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সবকিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।’
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ আনার কারণেই ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ মহা পবিত্র, মহা সম্মানিত ও মহা ফযীলতপূর্ণ দিন হিসেবে কায়িনাতে সাব্যস্ত হয়েছে এবং থাকবে। 

আজ সেই মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ।
যা কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যই- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর অর্থাৎ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।  যা সৃষ্টিকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদের দিন।

তাই কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, সর্বোচ্চ তা’যীম-তাকরীম, মুহব্বত ও ভাবগাম্ভীর্যতার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা।

আর সকল দেশের সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ আয়োজনে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা।


যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ আনেন রবীউল আউয়াল শরীফ মাসের ১২ই শরীফ। আর একারণেই পবিত্র রবীউল আউয়াল শরীফ হচ্ছে- সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম আর ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ অর্থাৎ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবীই হচ্ছে- কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর। যা পালন করা মুসলমান তো অবশ্যই জিন-ইনসানসহ সমস্ত কায়িনাতের জন্য ফরয এবং নাজাতেরও কারণ। যা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত। 
সকল ঈদের সেরা ঈদ অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৪৩৩ হিজরী উপলক্ষে তিনি এসব কথা বলেন।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ ও আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের ইজমা হয়েছে যে, যে মাটি মুবারক আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শরীর মুবারক স্পর্শ করেছে সে মাটি মুবারক-এর মর্যাদা লক্ষ-কোটি আরশে আযীমের চেয়েও বেশি। সুবহানাল্লাহ! হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তায়াল্লুক-নিসবত থাকার কারণে মাটি মুবারক-এর যদি এত মর্যাদা-মর্তবা হয়ে থাকে, তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে তারিখে যে দিবসে যে মাসে এসেছেন অর্থাৎ রবীউল আউয়াল শরীফ ও ১২ই শরীফ তার কতটুকু মর্যাদা-মর্তবা রয়েছে সেটা খুব সহজেই অনুধাবনীয়। এ মাস সব মাসের চেয়ে বেশি সম্মানিত ও ফযীলতপ্রাপ্ত মাস অর্থাৎ সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম। আর ১২ই শরীফ হচ্ছে সকল ঈদের সেরা ঈদ। যে ঈদ পালন করা কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যই ফরয।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ঊছুলে ফিক্বাহের সমস্ত কিতাবেই উল্লেখ আছে যে, আদেশসূচক বাক্য দ্বারা সাধারণতঃ ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়ে থাকে। যেমন কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “তোমরা নামায আদায় কর” কুরআন শরীফ-এর এ নির্দেশ সূচক বাক্য দ্বারাই নামায ফরয সাব্যস্ত হয়েছে। অনুরূপ হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “তোমরা (পুরুষরা) দাড়ী লম্বা কর।” হাদীছ শরীফ-এর এ নির্দেশ সূচক বাক্য দ্বারাই কমপক্ষে একমুষ্টি পরিমাণ দাড়ি রাখা পুরুষের জন্য ফরয-ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়েছে। ঠিক একইভাবে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা অর্থাৎ ১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ সোমবার শরীফ-এ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উপলক্ষে ঈদ করা বা খুশি প্রকাশ করা বান্দা-বান্দি ও উম্মতের জন্য ফরয-ওয়াজিব-এর অন্তর্ভূক্ত। কেননা এ ব্যাপারেও কুরআন শরীফ-এ পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে বহু স্থানে আদেশ-নির্দেশ রয়েছে। যেমন- মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা ইউনূস’-এর ৫৮ নং আয়াত শরীফ-এ বান্দা-বান্দি ও উম্মতদেরকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাভ করার কারণে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করতে সরাসরী নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি ইরশাদ করেন,“হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে জানিয়ে দিন, আল্লাহ পাক তিনি ফযল-করম এবং রহমত হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা সবকিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” (সূরা ইউনুস, আয়াত শরীফ: ৫৮)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর পবিত্র দিনটি শুধু ঈদের দিন নয় বরং এটি হচ্ছে সকল ঈদের সেরা ঈদ অর্থাৎ সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর। কারণ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার বিলাদত শরীফ-এর কারণে জুমুয়ার দিনকে দিনের সাইয়্যিদ এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ বলা হয়েছে। যদি তাই হয়, অর্থাৎ হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার কারণে যদি জুমুয়ার দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহার সাইয়্যিদ হতে পারে, তবে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর দিনটি যে সকল ঈদের সেরা ঈদের দিন; তার জন্য কি আরো দলীল প্রমাণের প্রয়োজন রয়েছে? হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনি তো উনার উসীলাই সৃষ্টি হয়েছেন। 

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বে যিনি সবচেয়ে বেশি কিতাব লিখেছেন, যিনি হিজরী দশম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ও ইমাম, সুলত্বানুল আরিফীন হযরত জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘ওসায়িল ফী শরহি শামায়িল’ নামক কিতাবে উল্লেখ আছে, “যখন কোনো মুসলমান নিজ বাড়িতে বিলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করে তখন সেই বাড়ির অধিবাসীগণের উপর থেকে মহান আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই খাদ্যাভাব, মহামারি, অগ্নিকা-, ডুবে মরা, বালা-মুছীবত, হিংসা-বিদ্বেষ, কু-দৃষ্টি, চুরি ইত্যাদি উঠিয়ে নেন। যখন উক্ত ব্যক্তি মারা যান তখন মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য মুনকার-নকীরের সুওয়াল-জাওয়াব সহজ করে দেন। আর উনার অবস্থান হয় মহান আল্লাহ পাক উনার সন্নিধানে সিদকের মাক্বামে।” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’য়ামাতুল কুবরা)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আল্লামা হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশ্বখ্যাত গ্রন্থ ‘ফতহুল বারী’ কিতাবের ৯ম খ-, ১১৮ পৃষ্ঠায় এবং আল্লামা হযরত বদরুদ্দীন আইনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রচিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘উমদাতুল ক্বারী’-এর ২০ খ- ৯৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন, হযরত ইমাম সুহাইলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেন যে, হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর তাকে স্বপ্নে দেখি যে, সে অত্যন্ত (কঠিন) দুরবস্থায় রয়েছে। সে বললো, (হে ভাই হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু!) আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর আমি কোনো শান্তির মুখ দেখিনি। তবে হ্যাঁ, প্রতি ইয়াওমুল ইছনাইনে শরীফ বা সোমবার শরীফ যখন আগমন করে তখন আমার থেকে সমস্ত আযাব লাঘব করা হয়, আমি শান্তিতে থাকি। হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আবু লাহাবের এ আযাব লাঘব হয়ে শান্তিতে থাকার কারণ হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর দিন ছিলো ইয়াওমুল ইছনাইনে শরীফ সোমবার শরীফ। সেই ইয়াওমুল ইছনাইনে শরীফ সোমবার শরীফ-এ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর সুসংবাদ নিয়ে আবু লাহাবের বাঁদী হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম তিনি আবু লাহাবকে জানালেন তখন আবু লাহাব উক্ত বিলাদত শরীফ-এর খুশির সংবাদ শুনে খুশিতে আত্মহারা হয়ে হযরত সুয়াইবা আলাইহাস সালাম উনাকে তৎক্ষণাৎ আযাদ করে দেয়। সুবহানাল্লাহ! (মাওয়াহিবুল লাদুননিয়াহ ১ম খ-, শরহুয যারকানী ১ম খ-, ২৬০ পৃষ্ঠা)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে ‘মাওলাহিবুল লাদুননিয়া’ কিতাবের বিখ্যাত শরাহ ‘শরহুয্ যারকানী’ কিতাবের ১ম খ-ের ২৬১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, হযরত ইবনুল জাযরী রহমতুল্লহি আলাইহি তিনি বলেন, “আবু লাহাবের মতো কাট্টা কাফির যার নিন্দায় কুরআন শরীফ-এর আয়াত শরীফ ও সূরা পর্যন্ত নাযিল হয়েছে, তাকে যদি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-এর রাত্রিতে আনন্দিত হয়ে খুশি প্রকাশ করার কারণে জাহান্নামেও তার পুরস্কার দেয়া হয়ে থাকে তবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের কোনো মুসলমান যদি ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে তার সাধ্যানুযায়ী টাকা-পয়সা ইত্যাদি খরচ করে তাহলে তাদের অবস্থা কিরূপ হবে? নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা উনার ফযল ও করমে অবশ্যই অবশ্যই তাকে নিয়ামতপূর্ণ জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (মাছাবাতা বিস সুন্নাহ ১ম খ-, ৮৩ পৃষ্ঠা)

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, কোনো কোনো জাহিল বলে, “শরীয়তে দুই ঈদ অর্থাৎ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা ছাড়া আর কোনো ঈদ নেই।” অথচ হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “প্রত্যেক মু’মিনের জন্য প্রতি মাসে চারটি ঈদ অথবা পাঁচটি ঈদ রয়েছে।” (হেদায়া শরীফ) এ হাদীছ শরীফ-এ মু’মিনের জন্য প্রতি মাসে ৪টি বা ৫টি ঈদের কথা বলা হয়েছে। কারণ, প্রতি মাসে সোমবার শরীফ ৪টি বা ৫টি হয়ে থাকে। আর শুক্রবারও প্রতি মাসে ৪টি বা ৫টি হয়ে থাকে। অর্থাৎ শরীয়তে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর- এ দুটিই নয় রবং আরো অনেক ঈদ রয়েছে। কাজেই, শুক্রবার মু’মিনদের ঈদের দিন। আরবী বা চন্দ্র বছর অনুযায়ী এক বছরে প্রায় ৫০টি শুক্রবার হয়ে থাকে। সে হিসেবে এ ৫০টি দিনও মু’মিনদের জন্য ঈদের দিন। আবার সোমবার শরীফ দিনও মু’মিনদের ঈদের দিন। চন্দ্র বছর অনুযায়ী এক বছরে প্রায় ৫০টি সোমবার শরীফ হয়ে থাকে। সে হিসেবে এ ৫০টি দিনই মু’মিনদের জন্য ঈদের দিন। আর আরবী বছরে ১২টি মাসের মধ্যে একটি মাস হচ্ছে রমাদ্বান শরীফ। যা ২৯ বা ৩০ দিনে হয়ে থাকে। এবং এ ২৯ বা ৩০ দিন রোযাদার মু’মিনের জন্য খুশির দিন বা ঈদের দিন। সুন্নত রোযার ৪২ দিন খুশির বা ঈদের দিন। মু’মিনের জন্য আরাফার দিন ঈদের দিন বা খুশির দিন। তন্মধ্যে ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফই সবচেয়ে বড় ঈদের দিন বা খুশির দিন। 

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হালে সরকারিভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করা হয়। ভিআইপি রাস্তায় কিছু রঙিন পতাকা, ব্যানার ইত্যাদি টানানো হয়। বিচ্ছিন্নভাবে অন্তঃসারশূন্য কিছু মাহফিল, সেমিনার ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয় এবং একেই যথেষ্ট বলে মনে করা হয়। অথচ তুলনামূলক তথ্যে দেখা যায়, এদেশে রবীন্দ্র, নজরুলের স্মরণসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানে যে বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয় তার চেয়ে অনেক কম অর্থ কেবল নয় বরং কম উৎসাহ ও কম আয়োজনের দ্বারা যেনোতেনোভাবে ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ-এর মতো পবিত্র দিনটিকে অতিক্রান্ত করা হয়। নাউযুবিল্লাহ! অথচ ঈমানের একান্ত দাবির কারণেই শুধু এ মুবারক দিনেই কেবল নয় বরং পুরো মাসে সরকারি বেসরকারি সর্বমহলে সর্বোচ্চ বাজেট বরাদ্দ করে অত্যান্ত খুশীর সাথে, ব্যাপক আয়োজনে, বিপুল উৎসাহে, গভীর মূল্যায়নে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালিত হওয়া ফরজের অন্তর্ভুক্ত।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, যেহেতু বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ জনগণ মুসলমান, প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী মুসলমান। পাশাপাশি বাংলাদেশে ইসলামকে রাষ্ট্র দ্বীন ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের জন্য আলাদাভাবে দায়িত্ব ও কর্তব্য ছিলো- হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনী মাস তথা সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহুর, শাহরুল আ’যম মাহে রবীউল আউয়াল শরীফ উপলক্ষে মাসব্যাপী সারাদেশে ব্যাপক ও শান শওকতপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ এবং যথাযথ তা’যীম-তাকরীম ও শান-শওক্বতের সাথে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালনের সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং এ উপলক্ষে কমপক্ষে একমাস ছুটি প্রদান করা।

মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ আনার কারণেই ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ মহা পবিত্র, মহা সম্মানিত ও মহা ফযীলতপূর্ণ দিন হিসেবে কায়েনাতে সাব্যস্ত হয়েছে এবং থাকবে। আজ সেই মহাপবিত্র ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ। যা কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যই- সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ, সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, সাইয়্যিদে ঈদে আকবর অর্থাৎ পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যা সৃষ্টিকুলের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদের দিন। তাই কুল-কায়িনাতের সকলের জন্যই ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, সর্বোচ্চ তা’যীম-তাকরীম, মুহব্বত ও ভাবগাম্ভির্যতার সাথে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা। আর সকল দেশের সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে, রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্বোচ্চ আয়োজনে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

*Coca-cola is Haram for Muslim

Because Coca-Cola and Other Soft Drinks may Contain ALCOHOL. Read Details here:~~~~ COCA-COLA: THE REAL THINGS? The proportions in the accompanying recipe are based on the analyses of Coke quoted above and Merory's recipes. The amount of caffeine agrees with that stated in Coca-Cola's So you asked about soft drinks... pamphlet; this is about a third of the caffeine found in the trial analyses. The following recipe produces a gallon of syrup very similar to Coca-Cola's. Mix 2,400 grams of sugar with just enough water to dissolve (high-fructose corn syrup may be substituted for half the sugar). Add 36 grams of caramel, 3.1 grams of caffeine, and 11 grams of phosphoric acid. Extract the cocaine from 1.1 grams of coca leaf ( Truxillo growth of coca preferred) with toluol; discard the cocaine extract. Soak the coca leaves and kola nuts (both finely powdered; 0.37 gram of kola nuts) in 22 grams of 20 percent alcohol. California white wine fortified to 20 percent strengt...

যে সকল শব্দ মুসলমানদের ব্যবহার করা উচিত নয়

শব্দ ব্যবহারের কুচিন্তায় যোগসাধনের ষড়যন্ত্র ইহুদী খ্রিস্টানদের ঐতিহ্যগত প্রবৃত্তি। স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময়ও ইহুদী খ্রিস্টানদের এরূপ ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার ছিল। কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা রঈনা বলো না উনজুরনা বলো এবং শ্রবণ কর (বা শুনতে থাক) আর কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।” (সূরা বাক্বারা ১০৪) আয়াতের শানে নযুলে বলা হয়েছে, ইহুদীরা রসুলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দেবার জন্য ‘রঈনা’ শব্দ ব্যবহার করত, যার একাধিক অর্থ। একটি অর্থ হল ‘আমাদের দিকে লক্ষ্য করুন’ যা ভাল অর্থে ব্যবহার হয় আর খারাপ অর্থ হল ‘হে মূর্খ, হে মেষ শাবক’ এবং হিব্রু ভাষায় একটি বদদোয়া। ইহুদীরা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রঈনা বলে সম্বোধন করত। যাতে প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল খারাপ অর্থের প্রতি ইঙ্গিত করা। আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ‘রঈনা’ শব্দের ভাল অর্থের প্রতি ইঙ্গিত করে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধন করলে ইহুদীরা খারাপ অর্থ চিন্তা করে হাসাহাসি করত। এতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলা...

উশরযোগ্য ফল-ফসলের বিধান

উশর কি?  পবিত্র ‘উশর’ শব্দটি আরবী আশরাতুন (দশ) শব্দ হতে উৎসরিত বা উৎকলিত হয়েছে। উনার আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থ হলেন এক দশমাংশ। আর সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায় কৃষিজাত পণ্য- ফল ও ফসলের পবিত্র যাকাত উনাকে পবিত্র উশর বলে। এক কথায়, উৎপাদিত ফল ফসলের যাকাতই হচ্ছেন পবিত্র উশর। পবিত্র উশর সম্পর্কে পবিত্র কুরআন শরীফ থেকে দলীলঃ পবিত্র উশর সম্পর্কে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার একাধিক পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক সুবহানাহূ ওয়া তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- وانفقوا من طيبات ماكسبتم ومـما اخرجنا لكم من الارض. অর্থ : “তোমরা তোমাদের উপার্জিত হালাল সম্পদ হতে এবং যা আমি তোমাদের জন্য যমীন হতে উৎপন্ন করিয়েছি তা হতে দান করো।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬৭) তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-  واتوا حقه يوم حصاده অর্থ : “ফসল কাটার সময় তার হক (পবিত্র উশর) আদায় করো।” (পবিত্র সূরা আনআম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৪১) উশর সম্পর্কে পবিত্র হাদিস শরীফে যা বর্ণিত রয়েছে:  এ প্রসঙ্গে অনেক হাদিস শরীফ পাওয়া যায়। তার মধ্যে ২টি পবিত্র হাদী...