মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা পরস্পর পরস্পরকে নেক কাজ ও পরহেযগারীতে সাহায্য করো, আর পাপ কাজ ও শত্রুতার মধ্যে সাহায্য করোনা।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ৯৭% জনগণ মুসলমান আর রাষ্ট্রীয় দ্বীন হচ্ছে ইসলাম।
কাজেই এদেশের জনগণের দায়িত্ব ও কর্তব্য হচ্ছে ইসলাম পরিপূর্ণভাবে পালন করা।
সে শর্তে ইসলামে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়া, পিপাসার্তকে পান করানো, আশ্রয়হীনকে আশ্রয় দেয়া ইত্যাদি নেক কাজের অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, রোহিঙ্গা মুসলমান যারা জীবন ভিক্ষাপ্রার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী তাদেরকে পুশব্যাক করা কখনো ইসলামী কাজ নয়।
স্মরণীয় যে, বাংলাদেশ সংবিধানের ২৫ (ক), ২৫ (খ) ও ২৫ (গ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ীও বাংলাদেশ সরকার সহিংসতা থেকে নিরাপত্তা লাভের উদ্দেশ্যে আগমনকারীদের তথা জীবন ভিক্ষাপ্রার্থীদের আশ্রয় দিতে পারে।
প্রতিবেশী দেশে মুসলমানদের অকাতরে শহীদ করা হচ্ছে, রাষ্ট্র দ্বীন ইসলামের দেশ সেটা কী করে চোখে দেখে নির্লিপ্ত থাকতে পারে?
বাংলাদেশের উচিত মিয়ানমারের উপর মুসলিম নির্যাতন বন্ধে শক্ত চাপ প্রয়োগ করা এবং ওআইসিসহ জাতিসংঘে বিষয়টি জোরদারভাবে উল্লেখ করা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদীতে ভাসমান শরণার্থীদের আহাজারি সপ্তাহকালেও থামেনি। তারপরেও নতুন করে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ না করতে দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানে ঢাকা। এ জন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা ও রাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায়ও ইচ্ছুক নয় বাংলাদেশ। আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি দল ঢাকায় এলে শুধু আগে থেকে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়েই আলোচনা হবে। নতুন ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা করবে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ সংস্থার চিঠি, এইচআরডব্লিউও, ভারতের হাইকমিশনার, কানাডার হাইকমিশনার, মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সের আনুষ্ঠানিক অনুরোধের পরও এ বিষয়ে অনড় আছে সরকার। রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় আগ্রহী ঢাকা। আগামী জুলাই মাসে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের ঢাকা সফরে দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ে এ আলোচনা হবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মিয়ানমারের আরাকানে আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলছে মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামের পর গ্রাম। ক’দিনের হামলায় মংডুতেই খুন হয়েছে হাজার হাজার মুসলমান। মিয়ানমারের নাসাকা বাহিনীসহ বার্মিজ সেনাদের হামলা-গুম, নির্যাতনের শিকার ২ সহ¯্রাধিক মুসলমান ২০টি ট্রলারযোগে উভয় দেশের নৌ সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্টে ৫ দিন যাবৎ ভাসমান অবস্থায় দিনাতিপাত করেছে। এদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। উভয় দেশের কেউই এদের মানবিক সহায়তায় এগিয়ে আসছে না। চলতি জুন মাসের শুরুতেই মিয়ানমারের এক মসজিদে ১০ জনসহ ১২ মুসলমানকে মগ (রাখাইন) সন্ত্রাসীরা হত্যা করার পর থেকে ওই দেশের মুসলিমপ্রধান অঞ্চলে নাসাকা বাহিনীর লুণ্ঠন ও সামরিক বাহিনীর হামলা তীব্রাকারে বৃদ্ধি পায়। এ থেকে আজ পর্যন্ত হত্যা-গুম, নির্যাতন-সম্ভ্রমহরণ, অগ্নিসংযোগসহ দিন দিন লোমহর্ষক ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নির্যাতনের শিকার হচ্ছে আরাকানের আলেম-মাদরাসার ছাত্র, পাড়া-মহল্লার সর্দার। সামরিক জান্তার সহায়তায় নাসাকার তীব্র নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না নারী ও শিশুরা। আরাকানে হাজার হাজার বাড়িঘর আগুনে জ্বলছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মায়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আরাকান (রাখাইন) প্রদেশের বাস্তুহারা মুসলিম রোহিঙ্গাগণ মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রদেশটিতে সাম্প্রতিক ভয়াবহ দাঙ্গার পর খাদ্য, পানি এবং আশ্রয়ের অভাবে এসব লোকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সরকারি হিসেবেই আরাকান (রাখাইন) প্রদেশের সিনেটর অং মিয়াত কিয়াও জানায়, 'প্রাদেশিক রাজধানী সিতবেতেই এখন প্রায় ৩০ হাজার উদ্বাস্তু অবস্থান করছে। এদের বেশিরভাগই রাখাইনের দাঙ্গা কবলিত গ্রামগুলো থেকে চলে আসা লোকজন।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সরকারিভাবে মায়ানমারের সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তেইন লিন জানায়, দাঙ্গার ফলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শতাধিক মৃত্যু হয়েছে, প্রায় আড়াই হাজার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস্তুহারা হয়েছে।
ওয়ান লাট ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা তান মিইত থেইন জানায়, সিত্তির উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে খাদ্য সঙ্কট কাটাতে ৬ থেকে ৭ দিন লেগে যাবে। কারণ হিসেবে সে মায়ানমারের দুর্বল যোগাযোগ অবকাঠামোর কথা উল্লেখ করে।
বর্তমান সঙ্কটের ব্যাপারে সে আরও জানায়, এখন পর্যন্তু সরকার কিংবা কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে কোনো রকম সাহায্য এসে পৌঁছায়নি।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। ইসলামের ভিত্তি হলো কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ। আর সুন্নাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “গোটা সৃষ্টিজগত মহান আল্লাহ পাক উনার পরিবার। মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সেই প্রিয় যিনি তার পরিবারের কাছে প্রিয়।”
হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “কোনো কাজ সবচেয়ে উত্তম। বলা হয়েছে ক্ষুধার্তকে খাদ্য দেয়া, পিপাসার্তকে পানি দেয়া, বস্ত্রহীনকে বস্ত্র দেয়া তথা আশ্রয়হীনকে আশ্রয় দেয়া।”
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আরাকানের সহিংসতা থেকে যেসব মুসলমান রোহিঙ্গাগণ নিরাপত্তা লাভের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে এসেছিল তাদেরকে রাখাইন (মগ) সন্ত্রাসী ও মায়ানমার সেনাবাহিনী শহীদ করতে চেয়েছিলো। তাই রাষ্ট্র দ্বীন ইসলাম-এর দেশ বাংলাদেশ সরকারের জন্য জীবনের নিরাপত্তা প্রার্থী তথা আশ্রয় প্রার্থীদের জন্য নূন্যতম আশ্রয়, পানি, খাদ্য ইত্যাদি দেয়া ইসলামসম্মত কাজ ছিলো। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম-এর বাংলাদেশ সরকার তা করেনি। এতে করে সাতানব্বই ভাগ মুসলমানের আবেগ, অনুভূতি, বিশ্বাস ও ইচ্ছার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। বরং এতে করে ৯৭ ভাগ মুসলমানের হৃদয়ে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ২৫ (ক), (খ), (গ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং সাধারণ ও সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টা করিবেন।’
‘প্রত্যেক জাতির স্বাধীন অভিপ্রায় অনুযায়ী পথ ও পন্থার মাধ্যমে অবাধে নিজস্ব সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্ধারণ ও গঠনের অধিকার সমর্থন করিবেন।” এবং ‘সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন করিবেন।’
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, উপরোক্ত অনুচ্ছেদের আলোকে বাংলাদেশ সরকার পারে মিয়ানমারের নিরস্ত্র মুসলমানদের সাহায্য করতে, মিয়ানমারের মুসলমানদের ন্যায়সঙ্গত দাবি সমর্থন করতে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের উচিত আরাকানে মুসলিম গণগত্যার জন্য মিয়ানমারের উপর শক্ত চাপ প্রয়োগ করা ওআইসি ও জাতিসংঘে জোরদারভাবে বিষয়টি তোলা। এবং বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে বিশেষ জনমত তৈরি করে রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সামগ্রিকভাবে কোশেশ করা।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন