আরাকানে মুসলমানদের উপর ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা, গণসম্ভ্রমহরণ, লুণ্ঠনের মচ্ছব চলছে; বিশ্ব মুসলিম নির্বাক
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘মু’মিনগণ পরস্পর ভাই ভাই।’
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই।’
আর আরাকানে মুসলমানদের উপর ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা, গণসম্ভ্রমহরণ, লুণ্ঠনের মচ্ছব চলছে।
অথচ সারা বিশ্বের মুসলমানরা নির্বাক।
দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলমান দেশ হিসেবে বাংলাদেশসহ কোনো মুসলমান দেশ শরয়ী দৃষ্টিতে নির্বাক থাকতে পারে না।
আশ্রয়ের জন্য যেসব মুসলমান বাংলাদেশে আসছে, বাংলাদেশ দ্বীনি ও মানবীয় মূল্যবোধ থেকে কোনোক্রমেই তাদের ফিরিয়ে দিতে পারে না।
বাংলাদেশের উচিত- মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা, ওআইসি ও জাতিসংঘে বিষয়টি জোরদারভাবে বলা।
এবং এ বিষয়ে মিয়ানমারকে জুলুম বন্ধ করার জন্য সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করা।
যে জাতিসংঘ সুদান ভাগ করে খ্রিস্টানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদান তৈরি করে; সে জাতিসংঘ আরাকানের মজলুম মুসলমানদের ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন?
তাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়ে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আরাকানে বর্তমানে যেভাবে মুসলিম গণহত্যা, গণসম্ভ্রমহরণ, গণলুণ্ঠন চলছে তা ইতিহাসের সব নৃশংসতা, বর্বরতা ও হত্যাকা-কে হার মানিয়েছে। বর্তমান যুগে এমনটি কল্পনাও করা যায় না। আরাকানী মুসলমানরা বর্তমানে পৃথিবীর সব চাইতে অসহায়, নির্যাতিত, নিপীড়িত জনগণে পরিণত হয়েছে। না খেয়ে মরা অথবা আগুনে পুড়ে মরা অথবা একদিকে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বুলেট অথবা অন্যদিকে বাংলাদেশী কোস্টগার্ড বা বিজিবির বুলেটে মৃত্যুই হচ্ছে তাদের একমাত্র ভাগ্য। (নাঊযুবিল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানরা হয় না খেয়ে মারা যাবে অথবা যেন আরাকান ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় এমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসার অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নির্যাতিত আরাকানী মুসলমান রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসতে চাইলে বিজিবি কোস্টগার্ড নির্দয়ভাবে তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলিম অধ্যুষিত বিভিন্ন গ্রাম আগুনে জ্বালিয়ে দেয়ার পর ওই সব গ্রামের মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গ্রামবাসীরা আগুন থেকে বের হতে গিয়ে হামলার শিকার হচ্ছে। অনেক গ্রামের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন যাপন করছেন। আকিয়াব বিমানবন্দরের পাশের শফি খান মসজিদসহ অন্তত ছয়টি মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছে রাখাইন (মগ) সন্ত্রাসীরা। মংডু শহরেও মুসলমানদের হাজার হাজার দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, করছে রাখাইন (মগ) সন্ত্রাসীরা।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে। সরকারের লেলিয়ে দেয়ার বাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছে মুসলিম রোহিঙ্গা যুবক, যুবতী, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, বালক-বালিকা নির্বিশেষে সবাই। বর্বর যালিম সন্ত্রাসী বৌদ্ধ রাখাইন যুবকদের হাতে সম্ভ্রমহরণের শিকার হচ্ছে মুসলিম যুবতীরা। দেশটির যালিম নাসাকা বহিনী ও বৌদ্ধ রাখাইন যুবকরা মিলে রোহিঙ্গা মুসলিম নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। গোটা মিয়ানমারা সামরিক প্রশাসন একতরফা মুসলমানদের উপর দমন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে তারা একযোগে চালাচ্ছে লুটতরাজ, মসজিদ ও বসতভিটাতে অগ্নিসংযোগ। অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম সহায়-সম্পদ হারিয়ে পাহাড়ের গুহায় অবস্থান নিয়েছে। মুসলমানদের রক্তের স্রোতে ভাসছে পুরো আরাকান রাজ্য। অসহায় শিশু, কিশোর, মজলুম মুসলমানদের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। দেশটির নাসাকা রাখাইন (মগ) কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলিমরা নির্মম হত্যাকা-, লুটতরাজ, গণসম্ভ্রমহরণ, অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রেখেছে। এদিকে নিজেদের বাস্তুভিটা হারিয়ে গত সোমবার ভোর ৫টায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলমান সপরিবারে ৬-৭টি ট্রলারযোগে বাংলাদেশে পাড়ি দেয়ার প্রাক্কালে মিয়ানমার নৌবাহিনী সমুদ্র টহলকালে দুটি ট্রলার সেন্টমার্টিনের ছেরদ্বীপের অদূরে তাদের হাতে ধরা পড়ে। মিয়ানমারের যালিম নৌবাহিনী তাৎক্ষণিভাবে ২টি ট্রলারকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়। এর ফলে মহিলা ও শিশুসহ ৬ শতাধিক মুসলিম ডুবে মারা যায় এবং হাইনখালীতে ৫/৬টি লাশ সাগরে ভাসতে দেখেছে স্থানীয়রা। মিয়ানমারের যালিম নৌবাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে এসে রোহিঙ্গাবাহী ৫টি ট্রলারের প্রায় ৩ শতাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শাহপরীর দ্বীপ ঘাঠ থেকে উঠার টেষ্টা করলে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয়। পরে বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম নাজিমর উদদীনের উপস্থিতিতে তাদের সোমবার বিকালে পুশব্যাক করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানদের হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলা হচ্ছে। লুটপাট চালানো হচ্ছে মংডু শহরে মুসলমানদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। পুলিশ প্রহরায় সন্ত্রাসী বৌদ্ধ রাখাইনরা হামলা চালাচ্ছে মুসলমানদের উপর। মুসলমানদেরকে নির্মমভাবে হত্যাপূর্বক তাদের মাথা ন্যাড়া করে রাখাইনদের ভিক্ষু সাজাতে লাল কাপড় মুড়িয়ে ছবি তোলে। এরপর উল্টো মুসলমানরা রাখাইন ভিক্ষুদের হত্যা করেছে মর্মে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচার করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে দেশটি থেকে পুরোপুরি উচ্ছেদের জন্য ১৯৪২ সালের মতো ভয়াবহ দাঙ্গার সৃষ্টি করা হয়েছে। রাখাইন বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলায় হাজার হাজার মুসলিম শহীদ হয়েছেন, হচ্ছেন। শত শত মসজিদ-মাদরাসাসহ হাজার হাজার গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিডিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অনুপস্থিতির কারণে সেখানকার সত্যিকারের চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি যে খুবই ভয়াবহ তা বোঝা যায় বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত রাখাইন রাজ্য থেকে জাতিসংঘের প্রায় ৪৪ জন সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার ঘটনায়। মুসলিম দমনে শুধু সন্ত্রাসী রাখাইনরাই নয়, যালিম পুলিশ ও নাসাকা নিরাপত্তা বাহিনীও অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আরাকানের মুসলমানদের উপর নির্যাতন সবসময়েই চলে আসছে। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তা অনেক বেড়ে গেছে। দেশটির অনেক সরকারি কর্মকর্তা, বৌদ্ধ ভিক্ষু, বুদ্ধিজীবীও এই নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ২০১১ সাল থেকেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচারণা চালানো হচ্ছে। তাদের প্রায়ই রোহিঙ্গা, বার্মিজ মুসলমান, কালার, মুসলিম গোষ্ঠী, অভিবাসী বঙালি ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হতে থাকে। উপনির্বাচনে অং সান সুচি’র জয়ের পর থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী তৎপরতা নতুনভাবে আরো বাড়তে থাকে। সুচি’র জয়ের দুই সপ্তাহান্তে কচিন রাজ্যের হপাকান্তে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা একটি মসজিদ গুড়িয়ে দেয়। মধ্য বর্মার মগবি অঞ্চলে দাঙ্গাবাজরা আরেকটি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয় এবং স্থানীয় মুসলমানদের সম্পত্তি লুটপাট করে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এসব দাঙ্গাবাজকে থামানোর কোনো চেষ্টাই করেনি।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানদের ১৯৪২ সালে বিতাড়ন করার জন্য মিয়ানমারে ব্যাপক দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিলো। দাঙ্গাবাজরা হামলার সময় রোহিঙ্গাদের বাঙালি অভিহিত করছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “পৃথিবীর সব মুসলমান একটি দেহের ন্যায়। দেহের এক প্রান্ত আক্রান্ত হলে যেমন সারাদেহে সঞ্চালিত হয়; তেমনি কোনো মুসলমান আক্রান্ত হলে গোটা মুসলিম বিশ্বে তা সঞ্চারিত হবে।” এই হাদীছ শরীফ-এর আলোকে ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দেশ বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল- একদিকে শরণার্থী মুসলমানদের আশ্রয় দেয়া অপরদিকে আরাকানের মুসলমানদের উপর এরূপ নৃশংস বর্বর হত্যাকা-ের জন্য মিয়ানমারের দূতাবাসকে ডেকে সতর্ক করা। মুসলিম গণহত্যা, গণসম্ভ্রহরণ, লুণ্ঠন বন্ধ করার জন্য কঠোর নির্দেশ দেয়া। পাশাপাশি ওআইসি’কে বিষয়টি গুরুতরভাবে নেয়ার জন্য বিশেষভাবে বলা। সব মুসলিম দেশসমূহকে উজ্জীবিত করা। এবং সম্মিলিতভাবে মিয়ানমারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পাশাপাশি যে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সাম্য-শান্তির মোড়ল দাবিদার সে জাতিসংঘকে বিষয়টি জোরদারভাবে উচ্চকিত করা। যে জাতিসংঘ সুদানে খ্রিস্টানদের উপর অত্যাচার হচ্ছে অজুহাতে তাদের জন্য আলাদা স্বাধীন রাজ্য দক্ষিণ সুদান করে দেয়, পূর্ব তিমুরকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা করে দেয়, সে জাতিসংঘ শত শত বছর ধরে নিপীড়িত আরাকানী মুসলমানদের ক্ষেত্রে নিশ্চুপ কেন- সে প্রশ্ন জোরদারভাবে উত্থাপন করা।
পবিত্র কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা যালিমও হয়ো না, মজলুমও হয়ো না।”
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “সব কাফিরের ধর্ম এক।” কাজেই সব যালিম কাফিরদের বিরুদ্ধে মজলুম মুসলমানদের প্রতিবাদী হতে হবে। মুসলমানদের মজলুম হওয়া চলবে না।
-দৈনিক আল ইহসান
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, ‘এক মুসলমান আরেক মুসলমানের ভাই।’
আর আরাকানে মুসলমানদের উপর ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা, গণসম্ভ্রমহরণ, লুণ্ঠনের মচ্ছব চলছে।
অথচ সারা বিশ্বের মুসলমানরা নির্বাক।
দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলমান দেশ হিসেবে বাংলাদেশসহ কোনো মুসলমান দেশ শরয়ী দৃষ্টিতে নির্বাক থাকতে পারে না।
আশ্রয়ের জন্য যেসব মুসলমান বাংলাদেশে আসছে, বাংলাদেশ দ্বীনি ও মানবীয় মূল্যবোধ থেকে কোনোক্রমেই তাদের ফিরিয়ে দিতে পারে না।
বাংলাদেশের উচিত- মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করা, ওআইসি ও জাতিসংঘে বিষয়টি জোরদারভাবে বলা।
এবং এ বিষয়ে মিয়ানমারকে জুলুম বন্ধ করার জন্য সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি করা।
যে জাতিসংঘ সুদান ভাগ করে খ্রিস্টানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র দক্ষিণ সুদান তৈরি করে; সে জাতিসংঘ আরাকানের মজলুম মুসলমানদের ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন?
তাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়ে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আরাকানে বর্তমানে যেভাবে মুসলিম গণহত্যা, গণসম্ভ্রমহরণ, গণলুণ্ঠন চলছে তা ইতিহাসের সব নৃশংসতা, বর্বরতা ও হত্যাকা-কে হার মানিয়েছে। বর্তমান যুগে এমনটি কল্পনাও করা যায় না। আরাকানী মুসলমানরা বর্তমানে পৃথিবীর সব চাইতে অসহায়, নির্যাতিত, নিপীড়িত জনগণে পরিণত হয়েছে। না খেয়ে মরা অথবা আগুনে পুড়ে মরা অথবা একদিকে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর বুলেট অথবা অন্যদিকে বাংলাদেশী কোস্টগার্ড বা বিজিবির বুলেটে মৃত্যুই হচ্ছে তাদের একমাত্র ভাগ্য। (নাঊযুবিল্লাহ)
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানরা হয় না খেয়ে মারা যাবে অথবা যেন আরাকান ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় এমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে। খাদ্য ও চিকিৎসার অভাব প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নির্যাতিত আরাকানী মুসলমান রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসতে চাইলে বিজিবি কোস্টগার্ড নির্দয়ভাবে তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলিম অধ্যুষিত বিভিন্ন গ্রাম আগুনে জ্বালিয়ে দেয়ার পর ওই সব গ্রামের মানুষকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গ্রামবাসীরা আগুন থেকে বের হতে গিয়ে হামলার শিকার হচ্ছে। অনেক গ্রামের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন যাপন করছেন। আকিয়াব বিমানবন্দরের পাশের শফি খান মসজিদসহ অন্তত ছয়টি মসজিদ পুড়িয়ে দিয়েছে রাখাইন (মগ) সন্ত্রাসীরা। মংডু শহরেও মুসলমানদের হাজার হাজার দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে, করছে রাখাইন (মগ) সন্ত্রাসীরা।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা তীব্র থেকে আরো তীব্রতর হচ্ছে। সরকারের লেলিয়ে দেয়ার বাহিনীর হাতে প্রতিনিয়ত খুন হচ্ছে মুসলিম রোহিঙ্গা যুবক, যুবতী, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, বালক-বালিকা নির্বিশেষে সবাই। বর্বর যালিম সন্ত্রাসী বৌদ্ধ রাখাইন যুবকদের হাতে সম্ভ্রমহরণের শিকার হচ্ছে মুসলিম যুবতীরা। দেশটির যালিম নাসাকা বহিনী ও বৌদ্ধ রাখাইন যুবকরা মিলে রোহিঙ্গা মুসলিম নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। গোটা মিয়ানমারা সামরিক প্রশাসন একতরফা মুসলমানদের উপর দমন নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে তারা একযোগে চালাচ্ছে লুটতরাজ, মসজিদ ও বসতভিটাতে অগ্নিসংযোগ। অনেক রোহিঙ্গা মুসলিম সহায়-সম্পদ হারিয়ে পাহাড়ের গুহায় অবস্থান নিয়েছে। মুসলমানদের রক্তের স্রোতে ভাসছে পুরো আরাকান রাজ্য। অসহায় শিশু, কিশোর, মজলুম মুসলমানদের আর্তনাদে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। দেশটির নাসাকা রাখাইন (মগ) কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলিমরা নির্মম হত্যাকা-, লুটতরাজ, গণসম্ভ্রমহরণ, অগ্নিসংযোগ অব্যাহত রেখেছে। এদিকে নিজেদের বাস্তুভিটা হারিয়ে গত সোমবার ভোর ৫টায় ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলমান সপরিবারে ৬-৭টি ট্রলারযোগে বাংলাদেশে পাড়ি দেয়ার প্রাক্কালে মিয়ানমার নৌবাহিনী সমুদ্র টহলকালে দুটি ট্রলার সেন্টমার্টিনের ছেরদ্বীপের অদূরে তাদের হাতে ধরা পড়ে। মিয়ানমারের যালিম নৌবাহিনী তাৎক্ষণিভাবে ২টি ট্রলারকে সমুদ্রে ডুবিয়ে দেয়। এর ফলে মহিলা ও শিশুসহ ৬ শতাধিক মুসলিম ডুবে মারা যায় এবং হাইনখালীতে ৫/৬টি লাশ সাগরে ভাসতে দেখেছে স্থানীয়রা। মিয়ানমারের যালিম নৌবাহিনীর হাত থেকে পালিয়ে এসে রোহিঙ্গাবাহী ৫টি ট্রলারের প্রায় ৩ শতাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা নাগরিককে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে শাহপরীর দ্বীপ ঘাঠ থেকে উঠার টেষ্টা করলে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের হাতে আটক হয়। পরে বিজিবি ও কোস্টগার্ডসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম নাজিমর উদদীনের উপস্থিতিতে তাদের সোমবার বিকালে পুশব্যাক করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানদের হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলা হচ্ছে। লুটপাট চালানো হচ্ছে মংডু শহরে মুসলমানদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। পুলিশ প্রহরায় সন্ত্রাসী বৌদ্ধ রাখাইনরা হামলা চালাচ্ছে মুসলমানদের উপর। মুসলমানদেরকে নির্মমভাবে হত্যাপূর্বক তাদের মাথা ন্যাড়া করে রাখাইনদের ভিক্ষু সাজাতে লাল কাপড় মুড়িয়ে ছবি তোলে। এরপর উল্টো মুসলমানরা রাখাইন ভিক্ষুদের হত্যা করেছে মর্মে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রচার করা হচ্ছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে দেশটি থেকে পুরোপুরি উচ্ছেদের জন্য ১৯৪২ সালের মতো ভয়াবহ দাঙ্গার সৃষ্টি করা হয়েছে। রাখাইন বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের হামলায় হাজার হাজার মুসলিম শহীদ হয়েছেন, হচ্ছেন। শত শত মসজিদ-মাদরাসাসহ হাজার হাজার গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিডিয়ায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের অনুপস্থিতির কারণে সেখানকার সত্যিকারের চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি যে খুবই ভয়াবহ তা বোঝা যায় বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত রাখাইন রাজ্য থেকে জাতিসংঘের প্রায় ৪৪ জন সদস্যদের সরিয়ে নেয়ার ঘটনায়। মুসলিম দমনে শুধু সন্ত্রাসী রাখাইনরাই নয়, যালিম পুলিশ ও নাসাকা নিরাপত্তা বাহিনীও অভিযানে অংশ নিচ্ছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আরাকানের মুসলমানদের উপর নির্যাতন সবসময়েই চলে আসছে। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে তা অনেক বেড়ে গেছে। দেশটির অনেক সরকারি কর্মকর্তা, বৌদ্ধ ভিক্ষু, বুদ্ধিজীবীও এই নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ২০১১ সাল থেকেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচারণা চালানো হচ্ছে। তাদের প্রায়ই রোহিঙ্গা, বার্মিজ মুসলমান, কালার, মুসলিম গোষ্ঠী, অভিবাসী বঙালি ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হতে থাকে। উপনির্বাচনে অং সান সুচি’র জয়ের পর থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী তৎপরতা নতুনভাবে আরো বাড়তে থাকে। সুচি’র জয়ের দুই সপ্তাহান্তে কচিন রাজ্যের হপাকান্তে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা একটি মসজিদ গুড়িয়ে দেয়। মধ্য বর্মার মগবি অঞ্চলে দাঙ্গাবাজরা আরেকটি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয় এবং স্থানীয় মুসলমানদের সম্পত্তি লুটপাট করে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এসব দাঙ্গাবাজকে থামানোর কোনো চেষ্টাই করেনি।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মুসলমানদের ১৯৪২ সালে বিতাড়ন করার জন্য মিয়ানমারে ব্যাপক দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিলো। দাঙ্গাবাজরা হামলার সময় রোহিঙ্গাদের বাঙালি অভিহিত করছে।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “পৃথিবীর সব মুসলমান একটি দেহের ন্যায়। দেহের এক প্রান্ত আক্রান্ত হলে যেমন সারাদেহে সঞ্চালিত হয়; তেমনি কোনো মুসলমান আক্রান্ত হলে গোটা মুসলিম বিশ্বে তা সঞ্চারিত হবে।” এই হাদীছ শরীফ-এর আলোকে ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের দেশ বাংলাদেশ সরকারের উচিত ছিল- একদিকে শরণার্থী মুসলমানদের আশ্রয় দেয়া অপরদিকে আরাকানের মুসলমানদের উপর এরূপ নৃশংস বর্বর হত্যাকা-ের জন্য মিয়ানমারের দূতাবাসকে ডেকে সতর্ক করা। মুসলিম গণহত্যা, গণসম্ভ্রহরণ, লুণ্ঠন বন্ধ করার জন্য কঠোর নির্দেশ দেয়া। পাশাপাশি ওআইসি’কে বিষয়টি গুরুতরভাবে নেয়ার জন্য বিশেষভাবে বলা। সব মুসলিম দেশসমূহকে উজ্জীবিত করা। এবং সম্মিলিতভাবে মিয়ানমারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করা।
মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, পাশাপাশি যে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক সাম্য-শান্তির মোড়ল দাবিদার সে জাতিসংঘকে বিষয়টি জোরদারভাবে উচ্চকিত করা। যে জাতিসংঘ সুদানে খ্রিস্টানদের উপর অত্যাচার হচ্ছে অজুহাতে তাদের জন্য আলাদা স্বাধীন রাজ্য দক্ষিণ সুদান করে দেয়, পূর্ব তিমুরকে ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা করে দেয়, সে জাতিসংঘ শত শত বছর ধরে নিপীড়িত আরাকানী মুসলমানদের ক্ষেত্রে নিশ্চুপ কেন- সে প্রশ্ন জোরদারভাবে উত্থাপন করা।
পবিত্র কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা যালিমও হয়ো না, মজলুমও হয়ো না।”
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “সব কাফিরের ধর্ম এক।” কাজেই সব যালিম কাফিরদের বিরুদ্ধে মজলুম মুসলমানদের প্রতিবাদী হতে হবে। মুসলমানদের মজলুম হওয়া চলবে না।
-দৈনিক আল ইহসান
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন