"ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" উনার ব্যবহার তথা "আদব" এবং "বিয়াদবী" এই দুইয়ের মাঝের "জায়িজ" স্তর স্পষ্টকরণ করে পুনরায় "চূড়ান্ত আদব" এর স্তরে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে আলোচনা। মনোযোগ দিয়ে পড়লে জানতে পারবেন অনেক কিছু।
হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাছুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন, "আল্লাহ তাআ’লা এই উম্মাতের (কল্যাণের ) জন্য প্রত্যেক (হিজরি) একশত বছরের মাথায় এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন যিনি তাদের দ্বীনকে সংস্কার করবেন। (সুনান আবু দাউদ/৪২৯১)।
হাদীসটি সহীহ এবং এই হাদীসটি হাকিম মুস্তাতদরিকে বর্ণনা করেছেন এবং সহীহ বলেছেন। ইমাম যাহাবীও একমত হয়েছেন।
ব্যাখ্যা:
‘তাজদীদ’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে হাদীসে। এর অর্থ হল- নষ্ট হয়ে যাওয়া নতুন করা, বা হারানো জিনিসকে পুনঃরুদ্ধার করা। এই কাজ যিনি করেন উনাকে মুজাদ্দিদ বলা হয়। দ্বীনকে কুসংস্কার ও বিদ’আতের আবর্জনা থেকে মুক্ত করার চেষ্টাই উনার কাজ। প্রত্যেক শতাব্দীতে উম্মাতের মধ্যে জ্ঞান-গরিমায় উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন এক ব্যক্তির জন্ম হয় যিনি এ কাজ করেন। সেই ‘আলিম দীনের প্রচেষ্টায় দীন ইসলামকে পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য মুসলিমদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি হয়।
এক কথায় যিনি মুজাদ্দিদ হবেন, তিনি উনার যুগের মানুষদের ঈমান নবায়ন করবেন, আমল বিশুদ্ধ করবেন। তিনি পবিত্র কুরআন -সুন্নাহর আলোকে হককে হক, না-হককে না-হক, জায়িজকে জায়িজ, নাজায়িজকে নাজায়িজ বলে প্রমাণ করবেন, যদিও যুগের মানুষ এবং কিছু নামধারী আলেম-উলামা তার বিপরীত আক্বিদা পোষণ ও আমল করে থাকবে। তিনি মানুষকে আদব-শরাফত শিক্ষা দিবেন।
এই ১৫শত হিজরির মহান মুজাদ্দিদ হলেন- ইমামুল আইম্মাহ, মুহিউস সুন্নাহ, জামিউল আলক্বাব মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুমহান ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার মহাসম্মানিত শায়িখ হযরত সুলত্বানিন নাছির আলাইহিস সালাম। তিনি মানুষকে যেমন জায়িজ নাজায়িজ, হক-নাহক শিক্ষা দেন, ঠিক তেমনি আদব-শরাফতও শিক্ষা দেন।
তিনি-ই শিক্ষা দিলেন প্রচলিত মিলাদ শরীফে নবীজি উনার শান মুবারকে পঠিত ছলাত "আল্লাহুম্মা ছল্লি আ'লা সাইয়্যিদিনা মাওলানা মুহম্মদ, ওয়া আলা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা মুহম্মদ" পড়ার পরিবর্তে "আল্লাহুমা ছল্লি আ'লা সাইয়্যিদিনা মাওলানা রছুলিল্লাহ, ওয়া আ'লা আলি সাইয়্যিদিনা মাওলানা হাবীবিল্লাহ"- পড়াটাই অধিক আদবপূর্ণ।
তাহলে প্রশ্ন আসে, আগের তরতীবে পড়া কি তাহলে বেয়াদবী? পূর্বেরকার ওলী আল্লাহ যারা এভাবে পড়েছেন, উনারা কি তাহলে বেয়াদবী করেছেন??
নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!! ভাই, দাড়ান, দাড়ান। এত উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছেন কেন? রাজারবাগ শরীফ উনার পীর ছাহেব কি বলেছেন- আগের তরতীব ভুল, ঐভাবে পড়া বেয়াদবী?? মালানা সদরুল আমীন জগন্নাথপুরীর মত এক লাইন বেশি বুঝেন ক্যান? এতে নিজেও বিভ্রান্ত হবেন, মানুষকেও গোমরাহ করে ছাড়বেন! শুধু বলা হয়েছে- নতুন তরতীবে মিলাদ পড়া আরো অধিক আদবপূর্ণ বিষয়। তিনি আপনাদের "জায়েজ" এর মাক্বাম থেকে "আদব" এর মাক্বামে নিয়ে যেতে চান। তাসাউফের কিতাবাদীতে লিখা হয়- " তাসাউফের সম্পূর্ণটাই আদব"।
আবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুমহান রাজারবাগ দরবার শরীফের মহাসম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার তরফ হতে আদব শিখাতে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ১২ তম সংখ্যার ৪৯ পৃষ্ঠার সুওয়াল -জাওয়াব বিভাগের এক প্রশ্নের উত্তরে যখন বলা হলো- "..........। তবে জায়গা বিশেষে ব্যতিক্রম যায়িজ হলেও সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম মোবারকের জন্যই খাছ।"
এবং মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ২৩৯ তম সংখ্যার ৩১ পৃষ্ঠার সুওয়াল -জাওয়াব বিভাগের এক প্রশ্নের উত্তরে যখন বলা হলো- "..........। তবে ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই বাক্যটি অন্যদের জন্য ব্যবহার জায়িজ থাকলেও, তা শুধুমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে বলা বা লিখার ক্ষেত্রে খাছ করে নেয়া উচিত এবং এটা আদবেরও অন্তর্ভুক্ত।"
তখন এই মুনাফিক ফাসিক সদরুল আমীন জগন্নাথপুরী, ফুলতলি হতে বহিস্কৃত বকলম আইনুল হুদা ওরফে বেহুদা এবং তাদের চেলা-চামুন্ডারা এবং বিশেষ করে সুমহান রাজারবাগ দরবার শরীফে ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফিকরা প্রচার করতে লাগলো "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই মুবারক দু'য়া সম্বলিত বাক্যখানি অন্য কারো শানে ব্যবহার করা জায়িজ নয়, বরং তা হারাম/কুফুরী। তাদের অপপ্রচারের কারণে অনেক সাধারণ পীর ভাই-বোন ও সাধারণ মুসলিম এই আক্বিদা পোষণ করা শুরু করতে লাগলো যে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতিত অন্য কারো নাম উচ্চারণ করার পর "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই বরকতময় বাক্য উচ্চারণ করা যাবে না, বরং তা হারাম-নাজায়েজ ও কুফুরী হবে। নাউজুবিল্লাহ। মুনাফিকরা একটি জায়িজকে নাজায়িজ ফতওয়া দিয়ে মানুষের আক্বীদা নষ্ট করার সূক্ষ্ম চক্রান্ত শুরু করেছিল। তারা এভাবে অন্য কারো নাম উচ্চারণ করার পর "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" উচ্চারণ করা রীতিমত বেয়াদবীর শামিল এ পরিণত করার অপচেস্টা করেছিল। ইনডারেক্টভাবে তারা পূর্ববর্তী হাদিস শরীফ উনাদের ইমামগণ ও অন্যান্য ইমাম মুজতাহিদগণ কর্তৃক লিখিত বিভিন্ন কিতাবাদীতে যে - বিভিন্ন নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম, মাযহাবের ইমাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম, হযরত ফিরিশতা আলাইহিমুস সালাম, হযরত সাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত আউলিয়া-কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারকে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই বাক্য মুবারক বিবৃত হয়েছে, এই বিষয়টিকেও তারা (মুনাফিকরা) বিয়াদবী/হারাম/নাজায়িজ/কুফর/শিরিক বলে সাব্যস্ত করার অপচেষ্টা করেছে। নাউযুবিল্লাহ।
কিন্তু, আগেই যেটা বলেছিলাম, যিনি মুজাদ্দিদ হবেন, তিনি জায়িজকে জায়িজ প্রমাণ করবেন, নাজায়িজকে নাজায়িজ প্রমাণ করবেন। জায়িজ এর বিষয়টিকে তিনি আদবের উচ্চ মাক্বামে পৌছাবেন।
মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার সুওয়াল জবাব (১২তম ও ২৩৯তম সংখ্যা) এর মধ্যে যেটি বলা হয়েছে, সেটিতে নামের শেষে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম "- ব্যবহার সংশ্লিষ্ট আদবের বিষয়টি বর্ণনা করা হয়েছে। আর এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যখন আইনুল হুদা ওরফে বেহুদা, সদরুল আমীন জগন্নাথপুরী মুনাফিক গংরা আদবের বিপরীত ব্যাখ্যা করল বিয়াদবী, নাজায়েজ/হারাম, তখন মানুষের আক্বীদা বিশুদ্ধ ও নবায়ন করতেই সুমহান রাজারবাগ দরবার শরীফ হতে প্রকাশিত মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ, দৈনিক আল ইহসান, কিতাবাদী সমস্ত জায়গায় "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই বরকতময় শব্দ তথা দুয়া মুবারক ব্যবহার করা হলো এবং সাথে সাথে অন্য কারো সাথে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই বরকতময় শব্দ তথা দুয়া মুবারক ব্যবহার করা যে জায়িজ রয়েছে, সে বিষয়ে পবিত্র হাদিস শরীফ ও ইমাম-মুজতাহিদগণের কিতাবাদি থেকে অসংখ্য দলীল দেয়া হলো এবং সেই দলীলের বলে হক তালাশীদের ঈমান হেফাজত হলো। তারা জায়িজকে জায়িজ বলে প্রমাণ পেয়েছে এবং মুনাফিকরা নাকানি চুবানি খেয়ে গোস্বায় তাদের হাতের আংগুল কামড়াতে শুরু করেছে।
তারা (মুনাফিক সদরুল আমীন জগন্নাথপুরী গং) আহাম্মক বলেই, নিজে নিজে ব্যাখ্যা দাড় করিয়েছে- বাংলা শাস্ত্রমতে- আদবের বিপরীত বিয়াদবী। তারা জানে না, ইসলামী শরীয়তে "হালাল" এর বিপরীত "হারাম" এর মাঝেও একটা স্তর আছে। যেটা "মুবাহ" নামে পরিচিত। যে আমল নিয়ত অনুযায়ী ফায়সালা হবে। ঠিক তেমনি "আদব" এর বিপরীত "বিয়াদবী"র মাঝেও আরেকটি স্তর আছে, যা "জায়িজ" নামে পরিচিত।
হারাম>মুবাহ>হালাল।
বিয়াদবী>জায়িজ>আদব।
রাজারবাগ শরীফ হতে পূর্বের ও পরের প্রকাশিত কোন ফতওয়ার মধ্যেই বৈপরীত্য নেই। বরং সূক্ষ্ম তাহকীক ও হিকমত রয়েছে।
মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার ১২তম ও ২৩৯তম সংখ্যায় "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আদব শিক্ষা দেয়া হয়েছে, আর পরবর্তীতে সুমহান রাজারবাগ শরীফ উনার মহাসম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং উনার পুতঃপবিত্র মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুমহান আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শান মুবারকে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" এই দুয়া মুবারক লিখে পুরো মুসলিম কমিউনিটির মধ্যে আলোড়ন তৈরি করে এব্যাপারে তাদের মধ্যে সুপ্ত জিজ্ঞাসা জাগ্রত করে বিস্তারিত দলীল আদিল্লা পেশ করে এ সংশ্লিষ্ট সমগ্র মুসলিম উম্মাহ'র আক্বীদা বিশুদ্ধ ও নবায়ন করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
আর এতে যেটা কাজ হয়েছে, কাঠের ভিতরের ক্ষতিকারক উইপোকার মত সুমহান রাজারবাগ দরবার শরীফে যেসব সুফি লেবাসধারী ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফিক ছিল, সেগুলি বের হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ। কাঠের ছিদ্রে কেরোসিন ঢেলে দিলে, যেমন উইপোকাগুলি ছিদ্র থেকে বের হয়ে আসে, আলোচ্য "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহারও রাজারবাগ শরীফে ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফিকদের বের হতে টনিকের মত কাজ করেছে। সুবহানাল্লাহ।
এখন সাধারণ মুসলমানদের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত দলীল আদিল্লা পেশ করে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহারের "আদব" এবং "জায়িজ" এর বিষয়টি ফায়সালা করে তাদের আক্বীদা বিশুদ্ধ ও নবায়ন করা হয়েছে এবং মুনাফিকদের চিহ্নিত করে তাদের খপ্পর হতে তথা তাদের ওয়াসওয়াসা থেকে সাধারণ মুসলমানদের ফিরিয়ে রাখা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
তাই, এখন যেহেতু এই বিষয়টির চূড়ান্ত ফায়সালা (আদব এবং জায়িজ দুটোর দলিল) হয়ে গেছে, তাই সুমহান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহারের বিষয়ে "চূড়ান্ত আদব" এর স্তরেই পুনরায় প্রত্যাবর্তন করেছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন-"একমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -উনার শান মুবারকেই শুধুমাত্র "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার করতে হবে।" ইতিমধ্যে সমস্ত লিখনি এবং ওয়াজ মাহফিলে সেই বিষয়টি বাস্তবায়ন শুরু হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ। আর পূর্বে প্রয়োজনে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার করা এবং বর্তমানে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" আবার না ব্যবহার করা-সমস্ত কিছুরই ফায়সালা হয়েছে আসমানে, মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আহলুবাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মিলিত উপস্থিতিতে, অনুমতিক্রমে, আদেশ ও নির্দেশ মুবারকে।" আর এরকম বেমেছালভাবে ফায়সালা হবেই না কেন?- কারণ একজন মহান আল্লাহপাক উনার ওলী বিশেষ করে যিনি মহাসম্মানিত আহলু বাইত আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হোন, যিনি যুগের মুজাদ্দিদ হোন, উনি তো উনার প্রত্যেকটি কাজই করবেন মহাসম্মানিত ইলহাম ও ইলকা মুবারক দ্বারা।-এটাই স্বাভাবিক। সুবহানাল্লাহ।
সুমহান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার মহাসম্মানিত শায়েখ হযরত সুলত্বানিন নাছির আলাইহিস সালাম উনার রুহানী নিছবতযুক্ত তাজদিদ মুবারক, উনার কাজ, আমল, কার্যক্রম মুবারক যতই দেখি, ততই আশ্চর্য হয়ে যাই। উনার তাজদিদ মুবারকগুলি কত হিকমতপূর্ণ!! সুবহানাল্লাহ! এই "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার নিয়ে যতই চিন্তা করছি, ততই অবাক হচ্ছি- কতরকম যে কাজ হয়ে গেল!!!-যেরকম-(আমার ক্ষুদ্র ফিকির মতে)-
১। এ সংশ্লিষ্ট অগনিত দলিল দিয়ে মানুষের আক্বীদা বিশুদ্ধ করা হয়েছে- অন্য কারো ক্ষেত্রে দুয়া হিসেবে "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"- ব্যবহার করা জায়িজ আছে।
২। কিতাবাদিতে অতীতের অনেকের ক্ষেত্রেও "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার হয়েছে, যেটা কখনোই বিয়াদবী হয়নি, বরং জায়িজ হয়েছে।
৩। রাজারবাগ শরীফ উনার মহাসম্মানিত শায়েখ এবং উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা খাছুল খাছ মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত হবার কারণে উনাদের শানেও "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার করা জায়িজ রয়েছে।
৪। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ের আদব হচ্ছে-"নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকেই শুধুমাত্র "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার করা, যা মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের মুবারক ফায়সালা।
৫। মুনাফিক সদরুল আমীন জগন্নাথপুরীর বিবৃত "আদব" আর "বিয়াদবী"- এই দুই স্তরের মাঝে "জায়িজ" বলে যে একটা স্তর আছে, সেটা স্পস্ট করা।
৬। সুমহান রাজারবাগ দরবার শরীফের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা মুনাফিকদের চিহ্নিতকরণ ও কুদরতিভাবে বিতাড়ন।
বিষয়টা অনেকটা হযরত আবু বকর শিবলী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে বাইয়াত হতে আসা এক ব্যক্তিকে কালিমা "লা ইলা হা ইল্লাল্লাহ, হযরত আবু বকর শিবলী রসূলিল্লাহ"-পাঠ করানোর ঘটনার মত। যারা এই কালিমা বলতে পেরেছে, তারাই উনার মুরিদ হতে পেরেছে, খাছ হিদায়েত হতে পেরেছে, আল্লাহ পাক উনার ওলী হতে পেরেছে। আর যারা পারেনি, ফিরে গেছে, তারা কেউ কেউ উনার বিরোধিতাকারী হয়েছে, মুনাফিক হয়েছে কিংবা পথভ্রষ্ট হয়েছে। কিন্তু পরক্ষনেই তিনি উনার মুরিদসহ এ বাক্য থেকে তওবা করে পুনরায় কালিমা পাঠ করে বিশুদ্ধ হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ।
ঠিক তদ্রুপ যারা রাজারবাগ শরীফ উনার মহাসম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম এবং উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের শানে " ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহার করা মেনে নিতে পারেনি, দলীল পাবার পরেও বিরোধিতা করেছে, তারাই কিন্তু মুনাফিক হয়েছে, মরদুদ হয়েছে, দরবার থেকে কুদরতি ভাবে বিতাড়িত হয়ে পথভ্রস্ট হয়েছে। কিন্তু সুমহান রাজারবাগ শরীফ ঠিকই পরক্ষনেই মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ উনাদের মুবারক নির্দেশমত "ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম" ব্যবহারের "জায়িজ" এর মাক্বাম থেকে পুনরায় "চূড়ান্ত আদব" এর মাক্বামে প্রত্যাবর্তন করেছেন। সুবহানাল্লাহ। হযরত আবু বকর শিবলী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার ঘটনার সাথে পুরাই মিল। মাঝখান দিয়ে ছাকনি দিয়ে মুনাফিকদের আলাদা করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
তাই ১২তম ও ২৩৯তম মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ উনার মধ্যে বিবৃত আক্বীদাঃ
"জায়গা বিশেষে ব্যতিক্রম যায়িজ হলেও সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুমাত্র হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নাম মোবারকের জন্যই খাছ।"
"ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"- এই বাক্যটি অন্যদের জন্য ব্যবহার জায়িজ থাকলেও, তা শুধুমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারকে বলা বা লিখার ক্ষেত্রে খাছ করে নেয়া উচিত এবং এটা আদবেরও অন্তর্ভুক্ত।"
এই আক্বীদাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুমহান রাজারবাগ শরীফ উনার চূড়ান্ত আক্বীদা এবং এর উপরই আমল ইনশাআল্লাহ।
#90daysmahfil
Sm40.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন