আমরা সবাই আবু লাহাবের কথা জানি, যে একজন চরম নিকৃষ্ট কাফির! হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নবুওয়াত মুবারক প্রকাশ করার পর থেকে সে ক্রমাগত বিরোধিতায় লিপ্ত ছিলো ! শুধু তাই নয় এই কাফির আবু লাহাব স্বপরিবারে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চরম বিরোধিতা করতো !!
তখন আল্লাহ পাক এই আবু লাহাব এবং তার স্ত্রীর ধ্বংস ঘোষণা করে সূরা লাহাব নামে একটি সূরা নাজিল করে দিলেন ! এছাড়া সূরা বাক্বারাহ এর প্রথম দিককার কিছু আয়াত শরীফও আবু লাহাবের এই নোংরা কার্যক্রমের ব্যাপারে নাজিল হয় !
অথচ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বিলাদত শরীফ (জন্ম) লাভ করেন তখন এই আবু লাহাব নিজের ভাই হযরত সাইয়্যিদুনা আবদুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার মুবারক পুত্রের বিলাদত শরীফ (জন্ম) উপলক্ষ্যে খুশি প্রকাশ করে ! তবে সে এই খুশি কিন্তু উনাকে নবী হিসাবে মেনে নিয়ে করে নি, সে খুশি হয়েছিল নিজের ভাইয়ের পুত্র সন্তান হওয়ার উপলক্ষ্যে !!
আর এই খুশি প্রকাশ করাটাই তার জন্য অনন্তকালব্যাপী একটি বিশেষ সুসংবাদের বিষয় হিসাবে প্রমানিত হয়েছে !!
আসুন এবার আমরা সহীহ হাদীস শরীফ থেকে দেখি কী ঘটনা ঘটেছিলো —
হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি বর্ননা করেনঃ
হযরত সুয়াইবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু আনহা তিনি ছিলেন আবু লাহাবের বাঁদী এবং আবু লাহাব হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফে খুশি হয়ে উনার খিদমত করার জন্য ওই বাঁদীকে আযাদ করে দিয়েছিলো ! এরপর হাবীবুল্লাহ, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তিনি দুধ পান করান।
অতঃপর আবু লাহাব যখন মারা গেলো (কিছুদিন পর) তার পরিবারের একজন অর্থাৎ তার ভাই হযরত আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু তিনি স্বপ্নে দেখলেন যে, আবু লাহাব সে ভীষণ কষ্টের মধ্যে নিপতিত আছে!
তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার সাথে কী রূপ ব্যবহার করা হয়েছে ?
আবু লাহাব উত্তরে বললো, যখন থেকে আপনাদের থেকে দূরে রয়েছি তখন থেকেই ভীষণ কষ্টে আছি !
তবে হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ (জন্ম) উপলক্ষ্যে খুশি প্রকাশ করে বাঁদী সুয়াইবা রদ্বিয়াল্লাহু আনহা উনাকে দু’আঙ্গুলের ইশারায় আযাদ/মুক্তি দেয়ার কারণে সেই দু’আঙ্গুল হতে সুমিষ্ট ঠান্ডা ও সুশীতল পানি পান করতে পারছি !””
[ রেফারেন্স - সহীহ বুখারী শরীফ – কিতাবুন নিকাহ- ২য় খন্ড ৭৬৪ পৃষ্ঠা ]
এইখানে আমাদের জন্য একটি অতি সূক্ষ্ম ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা রয়ে গেছেঃ
জাহান্নাম কেবলমাত্র শাস্তির জায়গা হলেও, আবু লাহাব কাফির ও জাহান্নামী হয়েও জাহান্নামে বিশেষ ব্যবস্থায় জান্নাতী নিয়ামত পাচ্ছে। তার কারণ সে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বিলাদত শরীফ (জন্ম) লাভ করেন তখন সে খুশি হয়েছিল, যদিও উনাকে নবী হিসাবে মেনে নিয়ে নয়।
তাহলে বোঝা গেলো যে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত উপলক্ষ্যে খুশি প্রকাশ করাটা মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে এত বড় একটা বিষয় যে কুফরী করলেও এই আমল নষ্ট হয় না।
তাহলে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতের কোন মুসলমান যদি খুশি প্রকাশ করে তাহলে তার প্রতি আল্লাহ পাক কতটুকু রহম করবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফে বলেনঃ
“হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি বলে দিন, আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে) পাওয়ার কারণে খুশি প্রকাশ করো। এই খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে সব কিছুর চাইতে উত্তম।”
(সূরা ইউনূছ : আয়াত ৫৮)
#90DaysMahfil | sm40.com
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন