মীলাদ মাহফিল ও ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদযাপনের সর্বশেষ্ঠ আমলটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আসছে ভ্রান্ত ওহাবী মতবাদের অনুসারীরা। আর ভারত উপমহাদেশে ওহাবী মতবাদের তল্পিবাহক দেওবন্দী গং। ইসলামের ইতিহাস নিয়ে একটু পড়াশোনা করলেও দেখা যায় ২০০বছর আগেও এ বিষয়ে কোন বিরোধীতা, ইখতিলাফ ছিলোনা। কারন তখনও শয়তানের শিং 'ওয়াহাবি মতবাদ' আবিস্কৃত হয়নি। এই বাতিল ফিরকাটি আবিস্কৃত হয় ১৮শতকের শেষের দিকে।
উপভারত মহাদেশে ওহাবী মুভমেন্টের বিস্তার ঘটে যাদের মাধ্যমে তাদের অন্যতম ছিলো দেওবন্দ গুরু মাওলানা আশরাফ আলী থানবী। মজার ব্যাপার হচ্ছে থানবী নিজেই এই সর্বশ্রেষ্ঠ আমলটির বিষয়ে তখন ইখতিলাফ সৃষ্টি করতে পারেনি। বরং তার লিখিত অনেকগুলো কিতাবে মিলাদ মাহফিলের ফজিলত বর্ণনা করেছে। এমনকি তার লিখিত বেস্ট সেলার বই বেহেশতী জেওর এর মধ্যেও এর ফজিলত বর্ণিত আছে।
আসুন দেখা যাক দেওবন্দীদের অন্যতম মুরুব্বী আশরাফ আলী থানবীর বেহেশতী জেওর এর ৬ষ্ঠ খন্ডের “সীরাতে পাক” অধ্যায় থেকে বিষয়টা তুলে ধরা যাক:
“রসূলের জীবনী আলোচনার মজলিসকে কেহ সীরাতে পাকের মজলিস বলে।কেহ মওলুদ শরীফ বয়ানের মাহফিল বলে, কেহ মাহফিলে মীলাদ বলে। আসল উদ্দেশ্য একই ভাষা ভিন্ন। ইহা অত্যান্ত জরুরী। মুসলমানদের ঘরে ঘরে এবং দোকানে দোকানে শুধু বৎসরে এক আধবার নয়, শুধু রবীউল আউয়ালের চাঁদে নয়, মাসে মাসে , সপ্তাহে সপ্তাহে এই পবিত্র মাহফিলে মীলাদের অনুষ্ঠান হওয়া বাঞ্ছনিয়।
কিন্তু বড়ই দুঃখের বিষয় সমাজে অজ্ঞতা এবং মূর্খতা ক্রমশঃ বাড়িয়া চলিয়াছে। মাহফিলে মীলাদ সমন্ধে বড় বাড়াবাড়ি এবং ঝগড়া বির্তক হইতেছে। ঝগড়া ফ্যাসাদের বির্তকের বাড়াবাড়ি ত্যাগ পূর্বক এই পবিত্র মাহফিলের অনুষ্ঠার সর্বত্র হওয়া দরকার।... সীরাতে পাকের মজলিস বা মাহফিলে মীলাদ নাম দিয়া অনুষ্ঠান করিলে তাহা বিদয়াত হইবে- কখনো নহে।”
[দলীলঃ বেহেশতী জেওর। লেখক- আশরাফ আলী থানবী। অনুবাদক- আশরাফ আলী থানবীর খলীফা শামসুল হক ফরীদপুরী। ভলিউম -২, খন্ড-৬, পৃষ্ঠা ২২২, অধ্যায়- সীরাতে পাক। প্রকাশনা- এমদাদীয়া লাইব্রেরী ( দেওবন্দী কওমীদের) ]
অথচ বর্তমান দেওবন্দী কওমীরা তাদের মুরুব্বীর আর্দশ থেকে কতটা বিচ্যুত হয়ে পরেছে। মাহফিলে মীলাদকে থানবী ও ফরিদপুরী অত্যান্ত জরুরী বলে উল্লেখ করেছে, অথচ কওমী দেওবন্দীরা এটা বিদয়াত-শিরিক বলে। মীলাদ মাহফিল প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে করা আবশ্যক বলে মুরুব্বীরা ঘোষনা দিয়ে গেছে অথচ বর্তমান কওমীরা মীলদের নামই শুনতে পারে না। শুধু তাই নয় থানবী ও ফরিদপুরী এটাও বলে গেছে , অজ্ঞতা এবং মূর্খতা বশত কিছু লোক মীলাদ শরীফ নিয়ে ঝগড়া বির্তক সৃষ্টি করছে, অর্থাৎ বর্তমান কওমী ওহাবীরা । থানবী ও ফরিদপুরী এই ঝগড়া বির্তক ত্যাগ করে পবিত্র মীলাদ মাহফিলের অনুষ্ঠার সর্বত্র জারি করা দরকার বলেও রায় দিয়ে গেছে।
তাহলে তাদের অনুসারী হয়েও যারা মিলাদ ক্বিয়ামের মাহফিল, ঈদে মীলাদ উদযাপনের মতে সর্বশ্রেষ্ঠ আমলের বিরোধিতা করছে তাদের উদ্দেশ্য কি? তাদের সাথে দেখা হলে এ প্রশ্নটি তাদের করুন।
#90DaysMahfil
sm40com
মন্তব্যসমূহ