জেনে রাখা দরকার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়কে কতটা ভালোবাসতেন। হাদীছ শরীফে বর্ণিত আছে,
عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالْحَلاَّقُ يَحْلِقُهُ وَأَطَافَ بِهِ أَصْحَابُهُ فَمَا يُرِيدُونَ أَنْ تَقَعَ شَعْرَةٌ إِلاَّ فِي يَدِ رَجُلٍ
হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি দেখেছি ক্ষৌরকার (যিনি পবিত্র চুল মুবারক কাটতেন) হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চুল ছাটছেন আর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ উনার চারপশে তাওয়াফ করছেন। উনারা চাইতেন যে, কোন চুল মুবারক যেন মাটিতে না পড়ে তা যেন কারো না কারো হাতে পড়ে। (মুসলিম শরীফ ৫৯৩৭, মুসনাদে আহমদ ১২৪০০)
চিন্তার বিষয় হচ্ছে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় উনার চুল মুবারক যাতে কোন ভাবে মাটিতে পরে না যায় তার জন্য রীতিমত তাওয়াফ করতেন এবং এ ব্যাপারে প্রচন্ড সর্তক থাকতেন। চুল মুবারককে উনারা কতটা মুহব্বত করতেন তার আরেকটি নমুনা বুখারী শরীফের হাদীছ শরীফে আছে,
عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، قَالَ قُلْتُ لِعَبِيدَةَ عِنْدَنَا مِنْ شَعَرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم أَصَبْنَاهُ مِنْ قِبَلِ أَنَسٍ، أَوْ مِنْ قِبَلِ أَهْلِ أَنَسٍ فَقَالَ لأَنْ تَكُونَ عِنْدِي شَعَرَةٌ مِنْهُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا.
হযরত ইবনু সীরীন রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হযরত আবীদা রহমতুল্লাহি আলাইহি কে বললাম, আমাদের কাছে হযরত রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার চুল মুবারক রয়েছে যা আমরা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর কাছ থেকে কিংবা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর পরিবারের কাছ থেকে পেয়েছি। তিনি বললেন, উনার একটি চুল মুবরাক আমার কাছে থাকাটা গোটা দুনিয়া এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তা পাওয়ার চাইতে বেশী পছন্দনীয়।” (সহীহ বুখারী ১ম খন্ড ৫৫ পৃষ্ঠা: হাদীছ শরীফ নং ১৭০)
উপরোক্ত আলোচনা থেকে কি বোঝা গেলো?
কেশ বা চুল মুবারককে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণ গোটা দুনিয়ার চাইতে বেশি ভালোবাসতেন। তাহলে স্বয়ং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কতটা ভালোবাসতেন সেটা ফিকিরের বিষয়।
লক্ষ্যণীয় যে, চুল মুবারকের এমন তাযিম করতে হবে এটা কুরআন শরীফে কোন আয়াত শরীফে কি আল্লাহ পাক বলেছেন? নাকি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোন হাদীছ শরীফে আদেশ করেছেন? কোনটাই নাই।
তাহলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা এমন কেন করতেন? উনারা হাকীকতে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযমত, উনার শ্রেষ্ঠত্ব , উনার মর্যাদার বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞান রাখতেন আর উনাদের ভালোবাসা ছিলো সর্বোচ্চ পর্যায়ের। ছাহাবায়ে কিরাম দেখিয়ে গেছেন আক্বীদা কেমন হতে হবে। মুহব্বত কেমন হতে হবে। উনারা এর জন্য কোন দলীল খোঁজেন নাই, বিদয়াত হবে কিনা সেটার ফতোয়া দিতে যান নাই।
মনে রাখতে হবে মুহব্বতের কোন সংজ্ঞা হয় না, কোন সীমা হয় না। মুহব্বত অন্তরের ভেতর থেকে তীব্রভাবে ছুটে আসে। যে কখনো ভালোবাসে নাই সে ভালোবাসার মাহত্ম্য বুঝবে না।
#90daysmahfil
Writer:
Noore Julfikar
১৫ রবিউল আউয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী
১২ অক্টোবর, ২০২২
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন