বাংলাদেশে পরকালে বিশ্বাসীর সংখ্যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি, তাহলে এ দেশে এতো হারাম কাজ, দুর্নীতি কেন হয়?
আসলে ঈমান থাকলেই তাক্বওয়া থাকবে বিষয়টা এমন নয়। তাক্বওয়া অর্জন করতে হয়। পবিত্র কুরআনের অনেক জায়গায় মহান আল্লাহ পাক 'ওয়াত্তাক্কুল্লাহ' (আল্লাহ পাক উনাকে ভয় কর) অর্থাৎ তাক্বওয়া অর্জনের কথা বলেছেন। কারন তাক্বওয়া ছাড়া কেউ হারাম কাজ বা ইবলিসের ধোকা থেকে বাঁচতে পারবেনা।
এখন তাহলে তাক্বওয়া কিভাবে অর্জন হবে?
যে ইলম অর্জন ও চর্চা করলে অন্তরে তাক্বওয়া (আল্লাহর ভয়) সৃষ্টি হয়, মানুষ পরহেজগার হতে পারে সেই শিক্ষা ব্যবস্থাতো বাংলাদেশে নেই। এমনকি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাতেও নাই। তাহলে দেশ থেকে দুর্নীতি, অপরাধ, অসামাজিক কার্যকলাপ কিভাবে কমবে? কখনো কমবে না।
সেই ইলিমটি হচ্ছে ইলমে তাসাউফ বা মারিফত যা ইলমে শরীয়তকে পূর্ণতা দান করে। এই শিক্ষা ব্যবস্থা পুঁথিগত নয়, রূহানী। একজন হক্কানি শায়েখ উনার নিকট বায়াত হয়ে ছবক আদায়ের মাধ্যমে অন্তর পরিশুদ্ধ করতে হয়। নির্দিষ্ট তরিকায় যিকির আযকার, দরুদ শরীফ ইত্যাদি আমল করতে করতে ধীরে ধীরে অন্তর থেকে দুনিয়ার মোহ, লোভ লালসা, হিংসা, অহংকার, দুনিয়ার প্রতি আসক্তি ইত্যাদি চরিত্রের খারাপ বিষয়গুলো অন্তর থেকে দূর হয়ে বিপরীতে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ভয় (তাক্বওয়া), মুহব্বত ও নিসবত অর্জিত হবে। এছাড়া কোন উপায় নেই। হাদিস শরীফে বর্নিত আছে, প্রতিটি বস্তুর পরিস্কারক আছে, আর অন্তর (ক্বলব) পরিস্কার হয় যিকিরের মাধ্যমে।
এই যিকিরকে বলা ক্বলবি যিকির। এটা আবার একা একা করলে হবেনা, একজন হক্কানি রব্বানী ওলি আল্লাহ উনার নিকট বায়াত্তর হয়ে উনার নির্দেশিত তরিকা আমল করতে হবে।
হক্কের উপর দায়েম কায়েম থাকা শায়েখ বা ওলি আউলিয়াগণ উনাদের ধারাবাহিকতা কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে মুর্শিদ (পথপ্রদর্শক)।’ (সূরা রাদ : ৭)
তাই একজন হক্কানি রব্বানী ওলি আল্লাহ উনার নিকট বায়াত গ্রহণ করা ফরয।
তবে মুখোশধারী ভন্ড প্রতারকরা সংখ্যায় বেশি থাকবে। এদের ভিড়ে যারা পরিপূর্ণ শরীয়ত বা সুন্নতের উপর চলেন এবং মারিফত শিক্ষা দেন উনাদের তালাশ করতে হবে।
আল্লাহ পাক বলেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে হিদায়েতদান করেন (যে হিদায়েত চায়), সেই হিদায়েতপ্রাপ্ত হয়। আর যে গুমরাহীর উপর দৃঢ় থাকে, সে কোন ওলীয়ে মুর্শিদ বা পথ প্রদর্শক পাবেনা।” (সূরা কাহাফ:১৭)
হক্কানি রব্বানী ওলি আল্লাহ চেনার উপায় কি?
এজন্য কোন আলেমের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বিষয়টা খুবই সহজ। শুধু এতটুকু দেখলেই হবে যে তিনি শরীয়তের খেলাফ (হারাম, নাজায়েজ) কোন কিছু করেন কিনা। যেমন- ছবি/ভিডিও করা, বেপর্দা হওয়া (বেগানা মহিলাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা), খেলাধুলা-গান বাজনা করা বা সমর্থন করা, রাজনীতি করা ইত্যাদি।
এরপর আরো যাচাই করতে চাইলে দেখুন তিনি পরিপূর্ণরূপে সুন্নত মুবারক অনুসরণ করেন কিনা।
বর্তমান আখেরী জামানায় যে আকিদা বিশুদ্ধ রেখে হারাম কাজ থেকে বিরত থাকতে পারবে সে সন্দেহে কামিয়াবি হাসিল করবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সঠিক পথ চেনার ও ইস্তেক্বামাত থাকার তৌফিক দান করুন। আমিন।
#90DaysMahfil
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন