মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা কখনই নেকী, সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারবে না যে পর্যন্ত না তোমাদের প্রিয় বা পছন্দনীয় বস্তু দান করবে এবং তোমরা যা কিছু দান কর সে সম্পর্কে আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই পূর্ণ খবর রাখেন। (সূরা আলে ইমরান : আয়াত শরীফ ৯২)
যাকাত একটি ফরয ইবাদত ও ইসলামের অন্যতম ভিত্তি।
যাকাতের নামে অপছন্দনীয় ও নিম্নমানের মাল বা বস্তু দান করা হারাম ও কুফরী।
কারণ, নিম্নমানের মাল বা বস্তু যাকাত হিসেবে দেয়া স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার সাথে প্রতারণা করা এবং যাকাতকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার শামিল; যা নিঃসন্দেহে কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
কাজেই, নিম্নমানের বা অপছন্দনীয় মাল বা বস্তু যাকাত হিসেবে দিলে কস্মিনকালেও যাকাত আদায় হবে না।
তাই যে সমস্ত দোকানে “যাকাতের মাল বিক্রি হয়” বলে সাইন বোর্ড লাগানো হয় তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে
যাকাত একটি ফরয ইবাদত ও ইসলামের অন্যতম ভিত্তি।
যাকাতের নামে অপছন্দনীয় ও নিম্নমানের মাল বা বস্তু দান করা হারাম ও কুফরী।
কারণ, নিম্নমানের মাল বা বস্তু যাকাত হিসেবে দেয়া স্বয়ং আল্লাহ পাক উনার সাথে প্রতারণা করা এবং যাকাতকে অবজ্ঞা বা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার শামিল; যা নিঃসন্দেহে কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
কাজেই, নিম্নমানের বা অপছন্দনীয় মাল বা বস্তু যাকাত হিসেবে দিলে কস্মিনকালেও যাকাত আদায় হবে না।
তাই যে সমস্ত দোকানে “যাকাতের মাল বিক্রি হয়” বলে সাইন বোর্ড লাগানো হয় তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যাকাত দেয়া নেসাবধারী ব্যক্তির জন্য ফরয। কিন্তু যাকাতগ্রহীতার জন্য যাকাত নেয়া ফরয নয়। সে ইচ্ছা হলে নিতেও পারে। ইচ্ছা হলে নাও নিতে পারে। তাই যে যাকাত গ্রহণ করে সেই ইহসান করে। কারণ, তাতে সে যাকাতদাতার যাকাত আদায়ে তথা ফরয আদায়ে সহযোগিতা করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যাকাতদাতা যাকাত দেয়ার মাধ্যমে আল্লাহ পাক উনার হুকুম আদায় করে। অর্থাৎ আল্লাহ পাক উনার প্রতিই তার যাকাত ন্যস্ত হয়। কিন্তু আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র। আল্লাহ পাক তিনি দেখেন শুধু বান্দার নিয়ত বা ইখলাছ। যেমন, কুরবানী সম্পর্কে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “আল্লাহ পাক উনার কাছে তোমাদের কুরবানীর গোশত ও রক্ত কিছুই পৌঁছে না। পৌঁছে তোমাদের বিশুদ্ধ নিয়ত।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, কেউ যদি মনে মনে যাকাত দেয়ার ক্ষেত্রে কমদামি বা নিম্নমানের জিনিস দেয়ার নিয়ত করে তবে তার সে খারাপ নিয়তই আল্লাহ পাক উনার দরবারে বিবেচিত হবে। এতে করে তার যাকাত আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল হবে না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, দান-সদকা, যাকাত-ফিতরা সবকিছু করতে হবে একমাত্র আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি হাছিলের উদ্দেশ্যে। গাইরুল্লাহর জন্য কোন আমল করা যাবে না। মানুষ দানশীল বলবে, দানবীর বলবে, দাতা বলবে, মানুষ জানবে, চিনবে, সমাজে নামধাম হবে, প্রচার-প্রসার ঘটবে, পরিচিতি হবে, যশ-খ্যাতি অর্জিত হবে, সমাজের অধিপতি হওয়া যাবে, নেতা-নেত্রী হওয়া যাবে, মসজিদের সেক্রেটারি, সভাপতি হওয়া যাবে, এলাকার চেয়ারম্যান, মেম্বার, মন্ত্রী-মিনিস্টার হওয়া যাবে ইত্যাদি সবই হলো গাইরুল্লাহ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, গাইরুল্লাহর উদ্দেশ্য থাকার কারণেই দেখা যায়, বেশি লোককে যাকাত দেয়ার জন্য অনেকে কম দামের খদ্দরের পাতলা লুঙ্গি ও পাতলা শাড়ি দিয়ে থাকে, যা সাধারণভাবে পরার উপযুক্ত নয়। আর সে লুঙ্গি ও শাড়ি যাকাত দানকারী ও দানকারিনীই পরিধান করতে কখনই রাজি হবে না বা পছন্দ করবে না। যদি তাই হয়, যেটা যাকাত দানকারী ও দানকারিনী নিজেরাই গ্রহণ করতে রাজি নয় সেটা আল্লাহ পাক তিনি কী করে গ্রহণ করবেন? মূলতঃ সে দান আদৌ আল্লাহ পাক উনার নিকট গৃহীত হবে না। আল্লাহ পাক তিনি তা পরিষ্কারভাবে কালাম পাকে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তোমরা কখনই নেকী, সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারবে না যে পর্যন্ত না তোমাদের প্রিয় বা পছন্দনীয় বস্তু দান করবে এবং তোমরা যা কিছু দান কর সে সম্পর্কে আল্লাহ পাক তিনি অবশ্যই পূর্ণ খবর রাখেন।” (সূরা আলে ইমরান : আয়াত শরীফ ৯২)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু দান কর এবং নিকৃষ্ট জিনিস দান করার নিয়ত বা মনস্থ করো না। কেননা, তোমরাই তা অনিচ্ছা সত্ত্ব ব্যতীত গ্রহণ করবে না। জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক তিনি গণী ও চরম প্রশংসিত। (সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ২৬৭)
যেমন এ প্রসঙ্গে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার দু’ছেলেকে আল্লাহ পাক তিনি কুরবানী করতে বললেন। এক ছেলে হযরত হাবীল আলাইহিস সালাম তিনি দুম্বা চরাতেন। তিনি উনার দুম্বা থেকে সবচেয়ে উত্তম একটি দুম্বা আল্লাহ পাক উনার উদ্দেশ্যে কুরবানীর জন্য পেশ করলেন। অপরদিকে আরেক ছেলে কাবীল যে ফসল চাষাবাদ করতো। সে তার ফসল থেকে নিম্নমানের কিছু শস্যাদি আল্লাহ পাক উনার জন্য পেশ করলো। অতঃপর দেখা গেল আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে আগুন এসে কেবল হযরত হাবীল আলাইহিস সালাম উনার দুম্বাটি জ্বালিয়ে বা ভস্ম করে ফেললো। অর্থাৎ উত্তম ও ভাল জিনিস দেয়ায় হযরত হাবীল আলাইহিস সালাম উনার কুরবানী কবুল হলো এবং তিনি আল্লাহ পাক উনার খাছ বান্দা হিসেবে মনোনীত হলেন। সুবহানাল্লাহ! পক্ষান্তরে নিম্নমানের জিনিস দেয়ায় কাবীলের কুরবানী কবুল হলো না এবং পরিণতিতে সে পৃথিবীর বুকে প্রথম হত্যাকারী ও জাহান্নামী হিসেবে পরিগণিত হলো। নাউযুবিল্লাহ।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, এখানে সম্পদের যাকাত, ফিতরা ও জমির ফসলের উশর ইত্যাদি ফরয, ওয়াজিব, নফল সকল প্রকার দান-ছদকার কথাই বলা হয়েছে। অর্থাৎ যেটা উত্তম, উৎকৃষ্ট, মূল্যবান সেটাই দিতে হবে। যেটা নিকৃষ্ট, নিম্নমানের, নিম্নমূল্যের সেটা দেয়া তো দূরের কথা সেটা দেয়ার কল্পনা বা চিন্তা করাও যাবে না। কেননা, খারাপটা কেউ গ্রহণ করতে চায় না। তাহলে আল্লাহ পাক তিনি সেটা কী করে গ্রহণ করবেন?
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, ইহুদী-খ্রিস্টানরা সবসময় ষড়যন্ত্রে মেতে থাকে কী করে মুসলমানদের আমলগুলো নষ্ট করে দেয়া যায়। যাকাতের জন্য আলাদাভাবে কমদামি শাড়ি-লুঙ্গি তৈরি করা তাদের সে ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। আজকাল অনেক দোকানে ব্যানার টানানো হয়, ‘এখানে যাকাতের কাপড় পাওয়া যায়।’ এর দ্বারা ফরয যাকাতের ইহানত করা হয়। নাউযুবিল্লাহ। যাকাতকে কম দামি ও কম মূল্যমানের বিষয় হিসেবে প্রতিপন্ন করা হয়। অথচ যাকাত অন্য কিছু নয় বরং যাকাত আল্লাহ পাক উনার হুকুম আদায়ের বিষয়। অর্থাৎ যাকাতের মাল যাকাতদাতার জন্য রেখে দেয়া, ব্যবহার করা, খাওয়া ইত্যাদি হারাম হলেও যাকাতগ্রহীতার জন্য তা ঠিকই হালাল। তাছাড়া যাকাতগ্রহীতা যদি যাকাতের মাল থেকে হাদিয়াস্বরূপ কাউকে দান করে (যার জন্য যাকাত খাওয়া জায়িয নেই) তবে তা গ্রহণ করা ও খাওয়াও তার জন্য জায়িয। কাজেই, যাকাত, ফিতরা, ছদক্বা, কাফফারা ইত্যাদি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের বিষয় নয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- নিম্নমানের বা অপছন্দনীয় মাল বা বস্তু যাকাত হিসেবে দিলে যাকাত আদায় তো হবেই না বরং কুফরী হবে। যাকাতের নামে নিম্নমানের বা অপছন্দনীয় মাল বা বস্তু দান করার প্রবণতা মূলতঃ অন্যান্য ইবাদত-বন্দিগীর ন্যায় যাকাতকেও নষ্ট করার ইহুদী, নাছারা ও মুশরিকদের অসংখ্য ষড়যন্ত্রের মধ্যে একটি অন্যতম সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র। যার থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয। কাজেই যে সমস্ত দোকানে “যাকাতের মাল বিক্রি হয়” বলে সাইন বোর্ড লাগানো হয় তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
১৫ আগস্ট, ২০১১ | ||||||||||
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন