যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেছেন, “শুদ্ধ গাণিতিক হিসাব করতে না পারায় প্রতিবছরই ইফা ফিতরা নির্ধারণে তিন ধরনের ভুল করে। প্রথমত, ১৬৫৭ গ্রামের স্থলে কমিয়ে ১৬৫০ গ্রাম নির্ধারণ করে। দ্বিতীয়ত, তারা খোলা বাজারের আটার দামে ফিতরা নির্ধারণ করে। অথচ খোলা বাজারের আটা গুণগত মানে ভাল নয় এবং তা ধনীরা তো নয়ই এমনকি মধ্যবিত্তরাও খায় না। তারা সবাই প্যাকেটের ভাল আটা খেয়ে থাকে। তারপরেও কথা হচ্ছে, প্যাকেটে আটা সব সময় ১ কেজি বা ২ কেজি পুরো থাকে না। অনেক সময় ২ কেজির প্যাকেটে থাকে ১৯৭৫ গ্রাম অথবা ১ কেজির প্যাকেটে ৯৭৫ গ্রাম বা ৯৮০ গ্রাম আটা থাকে। তৃতীয়ত, ইফা একই মূল্য শহর, গ্রাম তথা সারাদেশ ব্যাপী নির্ধারণ করে দেয়। অথচ বিভিন্ন অঞ্চলে দামের তারতম্য থাকতে পারে এবং সে হিসাবেই ফিতরার পরিমাণ নির্ধারণ হওয়া বাঞ্ছনীয়। কেননা দেশের বিভিন্ন এলাকায় আটার দাম বিভিন্ন রকম। কাজেই যাদের উপর ছদকাতুল ফিতর ওয়াজিব, তাদেরকে বর্তমান মূল্য হিসাবে এক সের সাড়ে বারো ছটাক বা ১৬৫৭ গ্রাম আটার মূল্য হিসেবে দিতে হবে। এ বছর ঢাকা শহরে ৩০.০০ টাকা কেজি হিসাবে এক সের সাড়ে বারো ছটাক বা ১৬৫৭ গ্রাম আটার মূল্য- ৪৯.৭১ টাকা অর্থাৎ ৫০ টাকা (প্রায়)।
যেমন, ১ কেজি বা ১০০০ গ্রাম আটার মূল্য ৩০.০০ টাকা।
প্রতি গ্রাম আটার মূল্য ৩০.০০ ÷ ১০০০= ০.০৩০ টাকা
১৬৫৭ গ্রাম আটার মূল্য ১৬৫৭ x ০.০৩০=৪৯.৭১ টাকা অর্থাৎ ৫০ টাকা (প্রায়)। এর কম দেয়া যাবে না। তবে ইচ্ছা করলে বেশি দিতে পারবে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, দেশের সব এলাকার আটার দাম এক রকম নয়। সাধারণত শহরের তুলনায় গ্রামে দ্রব্যমূল্যের দাম কিছুটা কম হয়ে থাকে। আবার খোলা আটার তুলনায় প্যাকেটের আটার মান ভালো হয়ে থাকে এবং তার দামও বেশি হয়ে থাকে। শরীয়তের ফতওয়া হচ্ছে, যেটা সবচেয়ে ভাল, পছন্দনীয় ও মূল্যবান সেটাই দান করতে হবে। খারাপ বা নিম্ন মূল্যের যেটা সেটা দান করা যাবে না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, ছদকাতুল ফিতরের পরিমাণ ও তার মূল্য নির্ধারণ সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে (ইফা) অনুষ্ঠিত সভায় মাওলানা, মুফতী, ইমাম ও খতীব ছাহেবরা যে সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে তা ভুল ও অশুদ্ধ। সুতরাং উল্লিখিত পরিমাণে কেউ ছদকাতুল ফিতর আদায় করলে তা আদায় হবে না। কারণ ছহীহ এবং গ্রহণযোগ্য মতে, নিছফু ‘সা’ বা অর্ধ ‘সা’ বলতে এক সের সাড়ে বারো ছটাক বুঝানো হয়েছে, যা গ্রাম হিসেবে প্রায় ১৬৫৭ গ্রাম হয়।
প্রমাণ:
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল তিনি আলী বলেন, অথচ ইফা ১ কেজি ৬৫০ গ্রাম তথা ১৬৫০ গ্রাম নির্ধারণ করে থাকে। প্রতিবারেই তারা ভুল করে থাকে। যা তাদের গণিত শাস্ত্রে চরম অজ্ঞতার প্রমাণ বহন করে।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি ফতওয়ায়ে আলমগীরী, ক্বাযীখান, বাহরুর রায়িক, হিদায়া, আইনুল হিদায়া ইত্যাদি সুপ্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবের বরাত উল্লেখ করে বলেন, হানাফী মাযহাবে শুধুমাত্র গম তথা আটার মূল্যে ছদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। অন্যকিছু দিয়ে ছদকাতুল ফিতর আদায় করা যাবে না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, দেশের প্রধান খাদ্য বা আটা ব্যতীত অন্য কিছু যেমন- চাল, খেজুর, কিসমিস, পনির ইত্যাদি দিয়ে ছদকাতুল ফিতর আদায় করা এটা মূলত মাযহাব অস্বীকারকারী লা-মাযহাবীদের ফতওয়া। কাজেই সে ফতওয়া হানাফী মাযহাব অনুসারীদের অনুসরণ বা আমল করা জায়িয নেই। এছাড়া এক মাযহাবের অনুসারীর জন্য অন্য মাযহাবের ফতওয়া বা মাসয়ালা অনুসরণ করাও জায়িয নেই।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যে সব মুফতী, মাওলানা মাযহাব সম্পর্কে জ্ঞাত নয়, আক্বীদা ও আমলে ত্রুটি রয়েছে, দুনিয়ার মোহ রয়েছে, তাক্বওয়া বা খোদাভীতি নেই, সর্বোপরি ফতওয়া দেয়ার জন্য যে ইলমে লাদুন্নী থাকা শর্ত তা নেই সেসব মুফতী, মাওলানার ফতওয়া বা মাসয়ালা ভুল হওয়াই স্বাভাবিক।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, যাদের দ্বীন বা শরীয়তের ইলম নেই তাদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, তোমরা আহলে যিকির বা আল্লাহওয়ালা অর্থাৎ হক্কানী-রব্বানী আলিম যাঁরা উনাদেরকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও।
আর আলিম যাঁরা রয়েছেন তাদের দায়িত্ব হলো প্রদত্ত মাসয়ালা বা ফতওয়ার স্বপক্ষে দলীল পেশ করা। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ইরশাদ করেন, “তোমরা সত্যবাদী হলে দলীল পেশ করো”। সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ-১১১।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- শরীয়তের ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য ফতওয়া মতে ঢাকা শহরের জন্য এ বছরের ছদকাতুল ফিতর হচ্ছে ৫০ টাকা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) ফিতরা নির্ধারণে পুনরায় ভুল করেছে। শুদ্ধ গাণিতিক হিসাব করতে না পারায় প্রতি বছরই তারা ফিতরা নির্ধারণে ভুল করে থাকে। এক সের সাড়ে বারো ছটাক অর্থাৎ ১৬৫৭ গ্রামের পরিবর্তে তারা ১৬৫০ গ্রাম হিসাব করে থাকে। কাজেই ফিতরা সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশন যে ফতওয়া দিয়েছে তা সম্পূর্ণই ভুল ও পরিত্যাজ্য। তাদের উচিত অতিসত্বর ভুল স্বীকার করে পুনরায় ফিতরার সঠিক পরিমাণ ও মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া। নচেৎ গরিবের হক্ব অর্থাৎ হক্কুল ইবাদ নষ্ট করার কারণে তারা দোষী সাব্যস্ত হবে।
২৫ আগস্ট, ২০১১
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন