ভারতবর্ষে মুসলিম সভ্যতা থেকে শিক্ষা নিয়েই যবন হিন্দুরা লেজ বিশিষ্ট মানুষ হওয়ার চেষ্টা করেছিলো॥ হিন্দু লেখকদের হিংসাত্মক লেখনিতেও এই ইতিহাস প্রমাণিত হয়
১৭৫৭ সাল থেকে ১৯১১ সাল পর্যন্ত কলকাতায় ব্রিটিশদের রাজধানী থাকায় শুধু এ
অঞ্চলেই হিন্দুদের প্রভাব বেশি ছিল। কিন্তু ভারতের অন্যান্য অঞ্চল, বিশেষ
করে উত্তরপ্রদেশে তা ছিল না। ফলে সাতচল্লিশে ভারত বিভাগের পরও সেসব জায়গায়
মুসলিমপ্রধান সমাজব্যবস্থা বিদ্যমান ছিল। এ নিয়ে আক্ষেপ করে নীরদ সি চৌধুরী
১৯৬৬ সালে ‘দেশ’ পত্রিকাতে প্রকাশিত ‘হিন্দুর মুসলমানী পরিচ্ছদ কেন?’
শীর্ষক প্রবন্ধে উল্লেখ করেছে-
“বাংলাদেশের সঙ্গে হিন্দুস্তানের (উত্তরভারতের) যে বড় সামাজিক ও সংস্কৃতিগত প্রভেদ গত দুই-তিন শত বৎসর ধরিয়া দেখা গিয়াছে তাহা এই- আমাদের (হিন্দুদের) মধ্যে নাগরিক, সভ্য ও বিদগ্ধ জনরা হিন্দু; আর মুসলমানরা প্রধানত গ্রামবাসী, কৃষক। আর আগে হিন্দুস্তানে ছিল ইহার উল্টা- হিন্দুরা প্রধানত গ্রামবাসী, কৃষক, খুব বেশি হইলে দোকানদার; আর মুসলমানরা ছিল নাগরিক সভ্যতার অবলম্বন। তাই হিন্দুস্তানে হিন্দু মাত্রেই সভ্য বলিয়া গৃহীত হইতে চাহিলে মুসলমানী রীতি ধরিত, অর্থাৎ তাহাদের (হিন্দুদের) ভাষা হইত উর্দু-ফার্সী, পোশাক হইত আচকান ইত্যাদি, আদব-কায়দাও হইত মুসলমানসুলভ। এখন যেমন সামাজিক প্রতিষ্ঠা জন্য লোকে ‘সাহেব’ হইতে চায়, তখন তাহারা মুসলমান হইত। ইহা ছাড়া সামাজিক জীবনে বিদগ্ধ হিন্দু, মুসলমানেরই সঙ্গে মেলামেশা করিত বেশি।”অর্থাৎ মুসলিমবিদ্বেষী হিন্দুদের রচিত ইতিহাসই আজ সাাক্ষ্য দিচ্ছে যে, ভারতবর্ষের বুকে মূলধারার সভ্যতা, সামাজিকতা, উত্তম পোশাক-আশাকে সজ্জিত হওয়া, ভালো খাদ্য খাওয়া ইত্যাদি শিক্ষা বিস্তার করেছেন মুসলমানগণ। আর পশুর মতো অসভ্য হিন্দুরা মুসলমানদের থেকে এসব শিখে লেজ বিশিষ্ট মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতো।
(সূত্র: নির্বাচিত প্রবন্ধ, নীরদচন্দ্র চৌধুরী, পৃষ্ঠা ২২৩)
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন