ভারতের সিলেবাসগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে ইসলামবিদ্বেষ আর কট্টর হিন্দুত্ববাদ, পক্ষান্তরে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের হাতে; সরকার কি ‘অখ- ভারত’ প্রতিষ্ঠার মিশনে সহযোগী হয়ে কাজ করছে?
১ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে কলকাতা থেকে প্রকাশিত ‘এই সময়’ পত্রিকায় (টাইম্স অব ইন্ডিয়া’র একটি প্রকাশনা) সম্পাদকীয় পাতায় বিজেপি’র বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে ‘রণকৌশল’ ও ‘স্লো পয়জনিং’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। প্রকাশিত কলামের চুম্বক অংশ এখানে তুলে ধরা হলো- “তাদের প্রথম শাসনকালে, বিজেপি, মন্ত্রী মুরলীমনোহর জোশীর নেতৃত্বে শিক্ষাক্রম আর ইতিহাস পাঠের উপর, যাকে বলে, দ্রুতগামী স্টিমরোলার চালিয়েছিল। হিন্দুত্বের স্টিমরোলার। এবারে, আরএসএস-কে সামনে রেখে, হিন্দুত্ববাদীরা ধীর গতিতে এগোচ্ছে। এমনকি আরএসএস-এর একজন মুখপাত্র বলেছে, ‘আমরা তড়িঘড়ি কিছু করবো না। আমাদের হাতে অনেক সময় আছে, আমরা সুচিন্তিত, মাপা পদক্ষেপ ফেলব।’ এই ভিন্ন রণকৌশল কেন? এই স্লো পয়েজনিং কেন? ... যা লক্ষণীয় তা হলো ইতোমধ্যেই আরএসএস-এর সঙ্গে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কম করে দুটি পূর্ণাঙ্গ বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকগুলিতেই আরএসএস স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে তারা কী চায়। এ প্রসঙ্গে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে অরুণ জেটলি, ক্ষমতাবান কেউই এই প্রভাব (কট্টর হিন্দুত্বাদ) বিস্তারের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি। কারণ তারা একই পথের পথিক। তারাও চায় যে হিন্দুত্ববাদী-পাঠক্রম প্রবর্তিত হয়, তবে মেপেমেপে। এ প্রসঙ্গে আমাদের মনে রাখতে হবে যে, সংঘ পরিবারের মূল স্তম্ভ হলো আরএসএস। আরএসএস-ই সব পরিচালনা করে।” পাঠক, ভারতে যেখানে তাদের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে কাজ করছে এবং সমগ্র ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠায় শিক্ষা ব্যবস্থাকে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে, ঠিক একই সময়ে আমাদের দেশের এনসিটিবি (ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সট বুক বোর্ড)-এর চেয়াম্যান পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে নারায়ণ চন্দ্র পাল নামক এক গোঁড়া হিন্দুকে। আর বোধ করি ভারতের এই দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার পথকে সুগম করতে আগে থেকেই শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে এক নাস্তিক মন্ত্রীকে। যার ফলে দেখা যায়, আমাদের নতুন বইগুলোতে লেখকদের একটি বড় অংশ হিন্দুত্ববাদের দখলে। অর্থাৎ হিন্দুদের দিয়ে বাংলা বই থেকে শুরু করে ইসলাম ধর্ম বই পর্যন্ত লেখানো হচ্ছে এবং হিন্দু লেখকদের গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ দিয়ে বইগুলো সাজানো হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ! এদিকে, পুলিশ প্রশসান থেকে শুরু করে সচিব, উপসচিবসহ সকল স্তরে বসানো হয়েছে হিন্দু আমলা। অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে হিন্দু কর্মকর্তা। অবস্থাদৃষ্টে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশেও উগ্র হিন্দুত্ববাদী আরএসএস’র ‘সুচিন্তিত, মাপা পদক্ষেপ’-এর প্রভাব বিস্তার ঘটানো হচ্ছে। সঙ্গতকারণেই প্রশ্ন উঠে, আ’লীগ সরকার কি ভারতের আজন্ম লালিত স্বপ্ন বাংলাদেশকে নিয়ে ‘অখ- ভারত’ প্রতিষ্ঠার সহযোগী হিসেবে কাজ করছে? |
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন