ভারতের গোঁড়া হিন্দু মুশরিকরা যতটুকু সভ্যতা পেয়েছে তা মুসলিম শাসনামলে, হিন্দুদের বর্বরোচিত সতীদাহ প্রথাও বন্ধ করেছিলেন মুসলিম শাসকগণ
একথা সবারই জানা রয়েছে, হিন্দুধর্মের একটি গোঁড়া বর্বর প্রথার নাম হচ্ছে ‘সতীদাহ প্রথা’। এ বর্বর নির্মম প্রথা অনুসারে স্বামীর মৃত্যুর পর চিতায় মৃত স্বামীর সাথে জীবন্ত স্ত্রীকেও পুড়িয়ে হত্যা করা হতো। মহিলাটি পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করলে, উগ্র হিন্দুরা তাকে টেনে-হেঁচড়ে, পিটিয়ে এরপর অগ্নিকুন্ডের মধ্যে নিক্ষেপ করতো।
এটা বন্ধের ইতিহাস নিয়ে অনেকে দাবি করে থাকে যে- চোর রামমোহন রায় হিন্দুদের সতীদাহ প্রথা বন্ধ করেছিল। অনেকে দাবি করে, ব্রিটিশ বেনিয়া উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক আইন করে সতীদাহ বন্ধ করেছিলো। আসলে প্রকৃতসত্য হচ্ছে, এর বহু আগেই মুসলিম শাসকরা বিভিন্ন সময় আইন করে এ বর্বর নির্মম প্রথা বন্ধ করেন, কিন্তু ইতিহাসে শুধু রামমোহন ও বেন্টিঙ্কের কথাই উল্লেখ করা হয়। যেমন: (১) সতীদাহ প্রথা বন্ধের প্রথম সরকারি প্রচেষ্টা মুসলিমরা করেছিলেন। মুহাম্মদ বিন তুঘলক তিনি সর্বপ্রথম এই প্রথা বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। (L. C. Nand, Women in Delhi Sultanate, Vohra Publishers and Distributors Allahabad 1989)
(২) মুঘল সম্রাটদের মধ্যে যাঁরা বর্বর সতীদাহ প্রথা বন্ধ করতে চেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে বাদশাহ হুমায়ূন তিনি স্থানীয় হিন্দুদের প্রতিবাদের মুখে পড়েছিলেন।
অনেক সময় মুঘল প্রশাসন থেকে বিধবা মহিলাদের পেনশন বা উপহার দেয়া হতো সতীদাহ না করার জন্য। (Central Sati Act – An analysis by Maja Daruwala is an advocate practising in the Delhi High Court. Courtsy: The Lawyers January 1988. The web site is called "People's Union for Civil Liberties")
(৩) শিশুদের এই প্রথা থেকে রক্ষা করা হয়েছিল মুসলিম শাসনামলে। সম্রাট শাহজাহান উনার সময় নিয়ম ছিল কোনো অবস্থাতেই যেসব মহিলাদের সন্তান আছে তাদের দাহ হতে দেয়া হবে না। (XVII. "Economic and Social Developments under the Mughals" from Muslim Civili“ation in India by S. M. Ikram edited by Ainslie T. Embree Nwe York: Columbia University Press, 1964. This page maintained by Prof. Frances Pritchett, Columbia University)
(৪) সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয় সম্রাট আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সময়। ১৬৬৩ ঈসায়ী সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি রুল জারি করেন, যেকোনো পরিস্থিতিতে মুঘল কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত দেশের কোথাও সতীদাহ প্রথা জারি করতে সরকারি অনুমতি দেয়া হবে না।
ইউরোপীয় পর্যটকদের বর্ণনা অনুযায়ী সম্রাট আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শাসনামলের শেষের দিকে সতীদাহ প্রথা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। (XVII. "Economic and Social Developments under the Mughals" from Muslim Civili“ation in India by S. M. Ikram edited by Ainslie T. Embree Nwe York: Columbia University Press, 1964. This page maintained by Prof. Frances Pritchett, Columbia University)
মূলত, এ উপমহাদেশে মুসলিম শাসন ছিলো হিন্দুদের জন্য আশির্বাদস্বরূপ। এখানে যদি মুসলমানরা শাসন না করতো, তবে হিন্দুরা সভ্যতা কি জিনিস তা জানতোই না, তখন তাদের জীবন হতো অ্যামাজন জঙ্গলের জংলী উপজাতিদের মতো।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন