মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা আলে ইমরান-এর ৮৫ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইসলাম ছেড়ে অন্য কোনো ধর্ম বা মতবাদ ও নিয়মনীতি তালাশ করবে তার থেকে সেটা কবুল করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। তাই মুসলমান মাত্রই একমাত্র ইসলামকেই অনুসরণ করতে হবে।
কোন মুসলমান ইসলাম ছেড়ে অন্য কোনো তর্জ-তরীক্বা বা নিয়ম-নীতি পালন করলে সে কস্মিনকালেও মুসলমান হিসেবে সাব্যস্ত হবে না। কাজেই, যারা ইসলামের নির্দেশ ত্যাগ করে কুফরীকে অনুসরণ করে সম্পত্তিতে নারী পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা তাহলে কি করে মুসলমান থাকবে? অতএব, সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- অতিসত্বর ওয়ারিছ স্বত্ব আইনসহ সর্বপ্রকার ইসলাম বিরোধী আইন বাতিল করা এবং সর্বক্ষেত্রে ইসলাম জারি করা।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তাওরাত শরীফ-এর একটি কপি এনে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি তাওরাত শরীফ-এর একটি কপি। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চুপ করে রইলেন। হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তা পড়তে আরম্ভ করলেন। আর এদিকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারক লাল হতে লাগলো। অর্থাৎ অসন্তুষ্টির ভাব ফুটে উঠলো। এটা দেখে হযরত আবু বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, হে হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনার জন্য আফসুস! আপনি কি দেখছেন না যে, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারক কিরূপ ধারণ করছে? তখন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চেহারা মুবারকের দিকে তাকালেন এবং অসন্তুষ্টির ভাব লক্ষ্য করে বললেন, আমি আল্লাহ পাক উনার অসন্তুষ্টি থেকে এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অসন্তুষ্টি থেকে আল্লাহ পাক উনার নিকট পানাহ চাচ্ছি। এবং আমরা আল্লাহ পাক উনাকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে ও হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী হিসেবে পেয়ে খুশি হয়েছি। তখন রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সেই আল্লাহ পাক উনার কছম! যাঁর অধিকারে আমার প্রাণ মুবারক রয়েছে, এ সময় যদি তোমাদের নিকট হযরত মূসা আলাইহিস সালাম (যার উপর তাওরাত শরীফ কিতাব নাযিল হয়েছে) তিনি জাহির বা প্রকাশ হতেন আর তোমরা আমাকে ছেড়ে উনার অনুসরণ করতে তবুও তোমরা সরল পথ থেকে অবশ্যই বিচ্যুত অর্থাৎ গুমরাহ হয়ে যাইতে। এমনকি তিনি যদি এখন হায়াতে থাকতেন আর আমাকে পেতেন তাহলে তিনিও অবশ্যই আমার অনুসরণ করতেন।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত)
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, অতএব, হযরত মূসা আলাইহিস সালাম উনার মতো জলীলূল ক্বদর রসূল উনার প্রতি নাযিলকৃত তাওরাত শরীফ হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মতো ছাহাবী নিয়ে আসার পরও যদি তা অনুসরণীয় ও গ্রহণযোগ্য না হয় এবং আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব উনাদের অসন্তুষ্টির কারণ হয় তবে অন্যান্য ধর্ম ও মতবাদগুলো গ্রহণ করা বা অনুসরণ করা কতটুকু আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের অসন্তুষ্টির কারণ হবে? তা সহজেই অনুমেয়। যেমন ছেলে ও মেয়েদের সম্পত্তি বণ্টনের বিষয়ে যা স্বয়ং আল্লাহ পাক তিনি নিজেই ছেলেকে দুই অংশ আর মেয়েকে এক অংশ দিলেন। সেখানে কোনো বান্দা যদি ছেলে ও মেয়ের অংশ সমান করে দেয় তাহলে সে কি করে মুসলমান থাকতে পারে? অনুরূপ বাল্যবিবাহ যা স্বয়ং হাবীবুল্লাহ রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে করলেন, করার অনুমতি দিলেন। সেখানে কেউ যদি নাছারা বা খ্রিস্টানদের অনুসরণ করে বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করে তা হলে সে কি করে মুসলমান থাকতে পারে? অনুরূপ নাতিকে দাদার ওয়ারিছ করা ও তালাক দেয়ার ক্ষেত্রে যারা কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী বিধান জারি করবে তারা কি করে মুসলমান থাকতে পারে?
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, কাজেই মন্ত্রিপরিষদ গত সোমবার যে তথাকথিত ‘নারী নীতিমালা’ গ্রহণ করেছে; তা সম্পূর্ণরূপে কুরআন শরীফ-এর বিরোধী যা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ যারা এই ইসলাম বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন, গ্রহণ ও সমর্থন করবে তারা কেউ মুসলমান থাকতে পারবে না।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, তাছাড়া সংবিধানে প্রস্তাবনায় সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস; সংবিধানের মূলনীতিতে দুইবার সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। এবং সংবিধানের ৮(১)(ক) ধারায় বলা হয়েছে, ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসই হবে যাবতীয় কার্যাবলীর ভিত্তি’।
আর সংবিধানের ২(ক) ধারায় বর্ণিত আছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কিন্তু অনুমোদিত নারীনীতিতে ইসলামদ্রোহী কাজ করা হয়েছে। কাজেই সংশ্লিষ্টরা রাষ্ট্রধর্ম অবমাননা থেকে রাষ্ট্রদ্রোহী আমলেও অভিযুক্ত হয়।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, সংবিধানের ৪১(১) ধারায় যার যার ধর্ম তার তার ধর্ম অনুযায়ী অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার সংরক্ষণ করা হয়েছে। ধর্মীয় নীতিমালার উপর কারো হাত দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। কিন্তু অনুমোদিত নারী নীতিমালায় ধর্মের উপর হাত দেয়া হয়েছে। সংবিধানের ২(ক), ৮, ৮১(ক), ৪১(১) ইত্যাদি বহু ধারার সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করা হয়েছে। কাজেই, যারা শরীয়ত বিরোধী নারী নীতিমালা অনুমোদন করেছে তারা যে শুধু ইসলামের দৃষ্টিতেই শাস্তির উপযুক্ত তা নয় বরং সংবিধানের দৃষ্টিতেও দ-বিধি অনুযায়ী শাস্তির উপযুক্ত।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী তিনি বলেন, মূলকথা হলো- বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিলো, ‘কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস হবে না’। অথচ অনুমোদিত নারী নীতিমালা অর্থাৎ সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমান অধিকার দেয়া উক্ত নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সম্পূর্ণ খিলাফ। এতে গোটা দেশবাসী জঘন্য প্রতারণা ও নিখাদ প্রবঞ্চনার শিকার হয়েছে। অতএব, সরকারের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- অতিসত্বর ওয়ারিছ স্বত্ব আইনসহ সর্বপ্রকার ইসলাম বিরোধী আইন বাতিল করা এবং সর্বক্ষেত্রে ইসলাম জারি করা। অর্থাৎ সরকার নতুন কোনো ইসলাম বিরোধী আইন জারি তো করতে পারবেই না বরং পুরাতন যতো ইসলাম বিরোধী আইন রয়েছে তাও বাতিল করে সর্বক্ষেত্রে ইসলামী আইন জারি করতে হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন